নিছক তলবি চিঠি পাঠিয়ে দিয়ে বসে থাকা চলবে না। বকেয়া বিল আদায় করার জন্য এ বার গ্রাহকদের সঙ্গে সরাসরি ফোনে কথা বলতে হবে বিভিন্ন স্তরের বিদ্যুৎকর্তাদের। বিল আদায়ের জন্য কয়েকটি গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে ফোনে কথা বলে বা মেসেজ পাঠিয়ে ভাল ফল পাওয়া গিয়েছে। তাই প্রতিটি জেলার অন্য সব কর্তাদেরও এই মডেল অনুসরণ করার পরামর্শ দিচ্ছে বিদ্যুৎ ভবন।
আর্থিক বছরের শেষে ভাঁড়ারে এমনই টানাটানি চলছে যে, জেরবার অবস্থা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার। বিল বাবদ বিভিন্ন সরকারি দফতরের কাছেই কয়েকশো কোটি টাকা পাওনা। এই অবস্থায় বাজারে পড়ে থাকা বিলের টাকা আদায় করা খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও অনেক জেলাই বকেয়া আদায়ে পিছিয়ে রয়েছে। কোটি কোটি টাকার বিল বকেয়া থেকে যাচ্ছে। সেই টাকা ঘরে তুলতেই সম্প্রতি বিদ্যুৎ ভবনের শীর্ষ এক কর্তা জেলার সব বিদ্যুৎকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন, মোট বকেয়া টাকার কমপক্ষে ৭৫ শতাংশ আদায় করতেই হবে। বণ্টন সংস্থার কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, বকেয়া টাকা আদায় করতে না-পারলে সংস্থার রাজস্ব-ক্ষতির পরিমাণ আরও বেড়ে যাবে। এগরা, খড়্গপুরের মতো বেশ কয়েকটি পরিষেবা কেন্দ্রে বিল না-মেটানো গ্রাহকদের সঙ্গে ফোনে সরাসরি কথা বলে ভাল ফল মিলেছে। তাই অন্যদেরও এই পথ অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।
বণ্টন সংস্থার এক কর্তা জানাচ্ছেন, এক শ্রেণির পদস্থ কর্মীর দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য সময়মতো বিল আদায় হয় না। ফলে সংস্থার রাজস্ব-ক্ষতি বেড়ে যেতে থাকে।
বিদ্যুৎকর্তাদের একাংশ জানান, খাতায়-কলমে দেখানো হচ্ছে, রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার গড় রাজস্ব-ক্ষতির হার খাতায়-কলমে ২২-২৪ শতাংশের ধারেকাছে। আসলে সেটা ৩২ শতাংশের উপরে। বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, বর্ধমানের কিছু অংশ, দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ কয়েকটি জেলার গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে এই ক্ষতির হার সব থেকে বেশি। বিদ্যুৎ চুরি তো আছেই। তার উপরে বিল না-মেটানোর প্রবণতা আগের তুলনায় অনেক বেড়ে গিয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিদ্যুৎকর্তারা। সে-ক্ষেত্রে জোনাল ম্যানেজার, রিজিওনাল ম্যানেজারদের মতো বিদ্যুৎকর্তাদের আরও সজাগ এবং সচেতন হয়ে বিল আদায়ের চেষ্টা চালাতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন বণ্টন সংস্থার কর্তৃপক্ষ।