বিজেপি কোনও কর্মসূচি না নিলেও নেতারা থাকবেন মিছিলে, সভায়।
গোটা রাজ্যে রামনবমী পালনের ডাক দিয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। আলাদা করে কর্মসূচি নিয়েছে সঙ্ঘ পরিবারের সংগঠন হিন্দু জাগরণ মঞ্চও। ঘোষিত ভাবে রবিবার রামনবমীতে বিজেপি-র কোনও কর্মসূচি না থাকলেও দলের ছোট-বড় সব নেতা নিজের এলাকায় মিছিল বা সভায় যোগ দেবেন।
রাজ্য নেতৃত্বের পক্ষে এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে বিজেপি সূত্রে খবর। দলের সাংসদ, বিধায়কদেরও রামেনবমীর কর্মসূচিতে অংশ নিতে বলা হয়েছে। আর খড়্গপুরে এমনই কর্মসূচিতে তিনি যোগ দিচ্ছেন জানিয়ে দিলীপ ঘোষের দাবি, সে মিছিলে অস্ত্রও থাকবে। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই তাঁর প্রশ্ন, ‘‘রামের নামে মিছিলে হাতে অস্ত্র থাকবে না তো কি লাড্ডু থাকবে?’’
করোনা পরিস্থিতিতে ২০২০ ও ২০২১ সালে রাজ্যে জাঁকজমক করে রামনবমী পালন করতে পারেনি বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। এ বার তাই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বড় আকারে রামনবমী পালন ও শোভাযাত্রায় উদ্যোগী হয়েছে তারা। অনেক আগে থেকেই জেলায় জেলায় প্রস্তুতির নির্দেশ পাঠানো হয়। পরিষদের দাবি, রাজ্যের প্রতিটি ব্লকেই কোনও না কোনও কর্মসূচি থাকবে। হিন্দু জাগরণ মঞ্চ কোথাও পরিষদের সঙ্গে কোথায় আবার আলাদা ভাবে মিছিল করবে। মঞ্চের পক্ষে জানানো হয়েছে, মেদিনীপুর, খড়্গপুর, সিউড়ি-সহ কয়েকটি শহরে বড় মাপের শোভাযাত্রা হবে। এই সব মিছিলে অস্ত্রশস্ত্র নিয়েও সংগঠনের কর্মী, সমর্থকেরা যোগ দেবেন বলে জানা গিয়েছে। এই প্রসঙ্গে সংগঠনের মুখপাত্র পারিজাত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরা কাউকে অস্ত্র নিয়ে মিছিলে আসতে বলব না। কিন্তু রামনবমীর মিছিলে বাড়িতে থাকা অস্ত্র নিয়ে আসাটাই রেওয়াজ। কেউ নিয়ে আসতেই পারেন।’’
অস্ত্র নিয়েই মিছিল করা উচিত বলে অতীতের মতো এ বারও সওয়াল করেছেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ। প্রসঙ্গত, তিনি রাজ্যে হিন্দু জাগরণ মঞ্চের দায়িত্ব পাওয়ার পরেই রামনবমীর মিছিলকে গুরুত্ব দিতে শুরু করে গেরুয়া শিবির। সদ্য বিদেশ সফর শেষ করে শুক্রবার আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনের প্রচারে অংশ নেন দিলীপ। জানিয়েছেন, শনিবার সন্ধ্যায় প্রচার শেষ করেই রাতে খড়্গপুরে যাবেন তিনি। আনন্দবাজার অনলাইনকে দিলীপ বলেন, ‘‘প্রতি বছরই খড়্গপুরে ধুমধাম করে রামনবমী পালন হয়। এ বারও হবে। করোনা নেই বলে এ বার একটু বেশিই আগ্রহ মানুষের। বেশ কয়েকটি শোভাযাত্রা বার হবে। শোভাযাত্রার শেষে সভাও হবে।’’ সেই সব মিছিল ও সভায় কি অংশগ্রহণকারীদের হাতে অস্ত্র থাকবে? জবাবে দিলীপ বলেন, ‘‘হিন্দুরা শক্তির উপাসক। সব দেবদেবীর হাতেই অস্ত্র থাকে। ভাগবান রামও যোদ্ধা ছিলেন। সেই রামের নামে মিছিলে হাতে অস্ত্র নয় তো কি লাড্ডু থাকবে?’’
রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এখন আসানসোলেই রয়েছেন। ভোটের প্রচারের পাশাপাশি রবিবার শহরে রামনবমীর মিছিলের অনুমতি মিললে তিনি তাতে যোগ দিতে পারেন বলেই বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘রামনবমীতে বিজেপি-র কোনও কর্মসূচি নেই। এটা হিন্দু জনতার ভাবাবেগের বিষয়। তাতে কেউ যোগ দিতেই পারেন। আর রামের মিছিল রামের দেশে হবে না তো কি বাবরের দেশে হবে?’’