সোমবারের মিছিল সফল করা বড় চ্যালেঞ্জ সুকান্তের। ফাইল চিত্র
সোমবার ওয়েলিংটন থেকে রানি রাসমণি রোড মিছিলে হাঁটার পরিকল্পনা নিয়েছে বিজপি। দলের পক্ষে নাম দেওয়া হয়েছে ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সঙ্কল্প মহামিছিল’। তবে মিছিল ‘মহা’ হয়ে উঠবে কি না তা নিয়ে রবিবারও চিন্তা রয়েছে গেরুয়া শিবিরে। এক দিকে তীব্র গরম, অন্য দিকে দলের অন্দরের সঙ্ঘাত কাটিয়ে মিছিল সফল করাই বড় লক্ষ্য গেরুয়া শিবিরের। আর এটা বড় পরীক্ষা রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কাছেও। কারণ, গত বছরের সেপ্টেম্বরে রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে একের পর এক উপনির্বাচন, পুরভোট নিয়ে ব্যস্ত থেকেছে দল। সেই সঙ্গে দলের সাংগঠনিক রদবদল এবং তার জেরে ক্ষোভ সামলাতে বড় সময় দিতে হয়েছে সুকান্তকে। সে অর্থে সোমবারই তাঁর আমলে প্রথমবার রাজ্য তথা কলকাতায় বড় কর্মসূচি। তাই গেরুয়া শিবিরও বলছে সোমবার বিজেপির পাশাপাশি বড় পরীক্ষা ব্যক্তি সুকান্তেরও।
এই মিছিলকে পরীক্ষার মতো করে নিয়েছেন সুকান্তও। গত এক পক্ষ কাল দক্ষিণবঙ্গের জেলায় জেলায় সফর করেছেন। হুগলি, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া থেকে দুই মেদিনীপুরে সভা, বৈঠক, মিছিল করেছেন। রাজ্যের অন্যান্য নেতাদেরও পাঠিয়েছেন জেলায় জেলায়। লক্ষ্য সোমবারের মিছিল সফল করা। এ নিয়ে সুকান্ত বলেন, ‘‘আমরা এই মিছিলে মূলত দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির উপরে জোর দিয়েছি। সব জেলাকেই টার্গেট ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। কর্মী, সমর্থকরা আসবেন। তবে তৃণমূল যে ভাবে সন্ত্রাস চালাচ্ছে তাতে অনেকেই বাধার মুখে পড়তে পারে, আমরা তার মোকাবিলা করেই মিছিল করব।’’ তবে বিজেপি নেতারা মুখে কেউ স্বীকার করতে না চাইলেও সোমবারের মিছিলে সাংগঠনিক ক্ষোভ-বিক্ষোভের ছায়া পড়বে কি না তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছে গেরুয়া শিবির। এমনকি, রাজ্য নেতারাও সকলে যোগ দেবেন কি না তা নিয়েও নানা জল্পনা রয়েছে।
শুধু সোমবারের মিছিলই নয়, আগামী কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে বিজেপি। ২০২১ সালের ২ মে বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পর দেখা যায় তৃতীয় বার বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ফের কুর্সিতে তৃণমূল। সেই সময় থেকেই বাংলা-জয়ের স্বপ্ন দেখা বিজেপি ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের অভিযোগ তোলে। এখনও সেই সন্ত্রাস চলছে বলে দাবি করেই ২ মে সোমবারের মিছিল। সোমবার মিছিল শেষে রানি রাসমণি রোডে একটি জনসভাও রয়েছে।
এর পরে ৩ মে কর্মসূচিতে রয়েছে অনশন পর্ব। ওই দিন বিজেপির দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত জনপ্রতিনিধি কলকাতার গাঁধী মূর্তির পাদদেশে হাজির থাকবেন। সেখানে তাঁরা এক বেলা অনশন করবেন। অনশন শেষে ‘শহিদ সাহায্য নিধি’ সংগ্রহ করবেন। অর্থাৎ, ভোট-পরবর্তী হিংসায় নিহত বিজেপি কর্মী ও সমর্থকদের পরিবারকে সাহায্যের জন্য অর্থ সংগ্রহ করবেন সাংসদ, বিধায়করা। ৪ মে থেকে ৬ মে তিন দিন রাজ্যে থাকতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অমিত এলে ৫ তারিখ শিলিগুড়িতে হবে সমাবেশ এবং ৬ তারিখ কলকাতায় হবে সাংগঠনিক বৈঠক। এর পর ৭ মে ভোট-পরবর্তী হিংসায় নিহতদের পরিবারের কাছে পৌঁছবেন বিজেপি নেতারা। ‘শহিদ’ পরিবারের কাছে আর্থিক সাহায্য নিয়ে যাওয়া হবে। এর পর ৮ ও ৯ মে দক্ষিণবঙ্গের ব্লকস্তরে মিছিল করবে বিজেপি। এর পর ১০ মে ‘শহিদ’ পরিবারের সদস্যদের কলকাতায় এনে ‘সত্যাগ্রহ’ কর্মসূচি পালন করবে বিজেপি। ওই দিন বিকেলে ‘শহিদ’ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রাজ্যপালের কাছে যাবেন বিজেপি নেতারা। পরের দিন ১১ মে প্রত্যেক জেলায় একটি করে মিছিল করবে বাংলার বিজেপি। সব কর্মসূচি সফল করা নিয়েই এখন পথে নামার চ্যালেঞ্জের মুখে রাজ্য বিজেপি।