বেশ কিছু দিন বিশেষ উচ্চবাচ্য ছিল না উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাধিকার নিয়ে। শুক্রবার উচ্চ মানের উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কলকাতায় এসে আবার সেই প্রশ্ন ও প্রসঙ্গ উস্কে দিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর প্রাক্তন চেয়ারম্যান বেদ প্রকাশ।
‘‘কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে শুধু শিক্ষায় স্বাধিকার দিলেই হবে না। প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষেত্রে পূর্ণ স্বাধিকার দিতে হবে। বহু টাকা খরচ করা সত্ত্বেও শিক্ষার তেমন উন্নতি হচ্ছে না,’’ বলেন বেদ প্রকাশ।
স্বাধিকার প্রসঙ্গে প্রাক্তন ইউজিসি-প্রধানের মন্তব্যের পরেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে শিক্ষা শিবিরে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জনগণের টাকা দেওয়া হয়। তাই সেখানে নাক গলানোর অধিকার সরকারের আছে বলে সওয়াল করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিস্তর বাদবিসংবাদের পরে ব্যাপারটা আড়ালে পড়ে গিয়েছিল। এ দিন বেদ প্রকাশ আর্থিক স্বাধিকারের প্রসঙ্গ তোলায় নড়েচড়ে বসেছে শিক্ষাজগৎ। তবে উচ্চশিক্ষার উন্নয়নে রাজ্য সরকারের প্রশংসাও করেছেন তিনি। অনেক নতুন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলে এবং সেগুলিতে নানান পাঠ্যক্রম চালু করে শিক্ষার উন্নয়নই ঘটানো হচ্ছে বলে তাঁর অভিমত।
কলকাতায় ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্টে ‘হিস্ট্রি অব প্রগ্রেস টুওয়ার্ডস কোয়ালিটি হায়ার এডুকেশন’ নিয়ে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন বেদ। দেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে নানা প্রশ্ন তোলেন তিনি। দেশ জুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাঙ্কিং হচ্ছে। প্রাচীন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে পাঁচ বছরের প্রতিষ্ঠান। এমন অসম প্রতিযোগিতায় আসল চিত্রই ফুটে উঠছে না বলে মনে করেন বেদ। তাঁর বক্তব্য, কোথাও পরিচয়ের অভাব তো কোথাও ভাল শিক্ষকের অভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পিছিয়ে পড়ছে। ওই সব জায়গায় উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে। কলকাতা ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে উৎকৃষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বলা হয়, ঠিক আছে। কিন্তু বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে কী কী সেরা জিনিস রয়েছে, অনেকেই তার খোঁজখবর রাখেন না। ফলে নিছক পরিচয়ের অভাবে অনেক উৎকর্ষ ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। এই জায়গাগুলো শুধরে নেওয়া দরকার।
বেদ জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যথাযথ ভাবে পরিচালনার জন্য যথার্থ নেতৃত্বের প্রয়োজন। নেতৃত্বের অভাব হলে সম্ভাবনাময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরও উন্নয়ন হয় না। তাই সে-দিকে সকলেরই নজর দেওয়া উচিত।