উত্তাল: পুলিশের গাড়ি ঘিরে স্থানীয়দের বিক্ষোভ। কোচবিহার আদালত চত্বরে শনিবার। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।
দলীয় কর্মী খুনে অভিযুক্ত তৃণমূলের এক বহিষ্কৃত নেতার শাস্তির দাবিতে শনিবার উত্তাল হল কোচবিহার আদালত চত্বর। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে বিক্ষোভকারীরা। তাদের ছোড়া ঢিলে জখম হয়েছেন চারজন সিভিক ভলান্টিয়ার।
১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের মেয়াদ শেষে এ দিন সকাল ১১ টা নাগাদ কোচবিহার জেলা আদালতে আনা হয় তৃণমূল কর্মী সুভাষ রায় (৪৮) খুনে অন্যতম অভিযুক্ত কালীশঙ্কর রায়–সহ মোট ১৩ জন অভিযুক্তকে। কালীশঙ্কর ছিলেন কোতোয়ালি থানার পাটছড়ার তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি। বাকিরাও দলের পরিচিত কর্মী। সুভাষবাবুকে খুনের অভিযোগ ওঠার পরেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয় তাদের। অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবিতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে এ দিন সকাল থেকেই আদালত চত্বরে ভিড় জমিয়েছিলেন এলাকার কয়েকশো মানুষ। পুলিশের গাড়ি অভিযুক্তদের নিয়ে আদালতে ঢুকতেই বিক্ষোভ শুরু হয়।
অভিযুক্তদের দিকে তেড়ে যায় জনতা। পুলিশের গাড়ির কাঁচ ভেঙে দেওয়া হয়। ক্ষুব্ধ জনতাকে সামলে অভিযুক্তদের নিয়ে আদালতের ভিতরে যায় পুলিশ। সেই সময় বাসিন্দাদের ছোঁড়া ঢিলে ৪ জন সিভিক ভলান্টিয়ার্স জখম হন। কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “আদালতের সামনে পুলিশ ছিল। তারাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।”
গত ১৮ মে কোতোয়ালি থানার পাটছড়ায় তৃণমূলের দলীয় অফিসে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে মারা হয় তৃণমূল কর্মী সুভাষবাবুকে। দুর্নীতির প্রতিবাদ করাতেই দাপুটে নেতা কালীশঙ্কর ও তার অনুগামীরা তাঁকে খুনের ছক কষেছিল বলে অভিযোগ। ঘটনার পর বেশ কিছুদিন গা ঢাকা দিয়েছিল অভিযুক্তরা। তাদের আড়াল করা হচ্ছে বলে তখন অভিযোগ উঠেছিল দলের অন্দরেই। গ্রেফতারের ব্যাপারে পুলিশের সক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এই নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বও প্রকাশ্যে আসে। এ দিন আদালত চত্বরে উপস্থিত গণেশ রায়, মানিক রায়রা বলেন, “গ্রাম পঞ্চায়েতের লক্ষ লক্ষ টাকা গায়েব করে দিয়েছে অভিযুক্তরা। এরই বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন সুভাষ। তাই তাঁকে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়। খুনিদের ফাঁসি চাই।”
সরকারি আইনজীবী সামসুল হক জানান, মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতের বিচারক সেলিম আনসারি এ দিন অভিযুক্তদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। ২৩ জুন তাদের ফের আদালতে তোলা হবে। পরে অভিযুক্তদের কোর্ট থেকে বের করার সময় ফের বিক্ষোভ দেখায় জনতা।