বিরোধী শিবিরের সমর্থক নন, তাঁরা শাসক দলেরই পক্ষে। কিন্তু সরকারের বদলি নীতিতে ক্ষোভ বাড়ছে শাসক দল প্রভাবিত সেই কর্মী সংগঠনের মধ্যেও। ক্ষোভ এতটাই যে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অভিযোগ জানাচ্ছে সংগঠন।
আবগারি দফতরের অধীনে নিগম গঠনের পরে শুরু হওয়া বদলি প্রক্রিয়া ঘিরে পদাবনতির অভিযোগ তুলে দফতরের কর্তাদের বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন আবগারি কর্মী-অফিসারদের অনেকেই। সম্প্রতি মোট ৭৪ জন অফিসারের বদলির নির্দেশিকা জারি করেছে আবগারি দফতর। তাঁদের ৪৮ জনই অ্যাসিস্ট্যান্ট কমার্শিয়াল ট্যাক্স অফিসার (এসিটিও)। অভিযোগ উঠেছে, বদলির পরে রাজ্য সরকারের দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মীদের মতো কাজ করতে হবে তাঁদের। কী ভাবে?
কর্মীদের একাংশের যুক্তি, এসিটিও-রা ডব্লিউবিসিএস গ্রুপ-সি অফিসার। প্রশাসনিক ভাবে এই ক্যাটিগরির অফিসারদের প্রত্যেকেই গেজেটেড মর্যাদার। যদিও বর্তমানে প্রশাসনের কোনও অফিসারকে খাতায়কলমে ‘গেজেটেড’ বলা হয় না। তবু প্রশাসনের অন্দরে অফিসারের গুরুত্ব বোঝাতে মৌখিক ভাবে রয়ে গিয়েছে ‘গেজেটেড’ কথাটি। এই মর্যাদার এসিটিও-দের বদলি করা হয়েছে আবগারি দফতরের বিভিন্ন সার্কেল অর্থাৎ আবগারি জেলায়। এর ফলে দফতরের সাব-ইনস্পেক্টরদের (প্রশাসনিক ব্যাখ্যায় তাঁরা নন-গেজেটেড) মতো কাজ হবে তাঁদেরও। আগে কারা কর ফাঁকি দিচ্ছেন, তার অনুসন্ধান করতেন এসিটিও-রা। এ বার সাব-ইনস্পেক্টরদের মতো বিভিন্ন জায়গায় ‘রেড’ করতে বা হানা দিতে হবে তাঁদের। কিন্তু হানা দেওয়া, গ্রেফতার বা বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা দেওয়া আছে সাব-ইনস্পেক্টর বা অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টরদের হাতে। এই কাজ এসিটিএ-দের করতে হলে আইনি বাধা আসতে পারে বলে মনে করছেন দফতরের অনেকেই। বস্তুত, সাব-ইনস্পেক্টরদের মতো চল্লিশোর্ধ্ব এসিটিও-দেরও পুলিশি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
দফতরের আধিকারিকদের একাংশের যুক্তি, জিএসটি বা পণ্য পরিষেবা কর চালু হওয়ার পরে আবগারি, কমার্শিয়াল ট্যাক্স, এগ্রিকালচার ইনকাম ট্যাক্স এবং স্ট্যাম্প রেজিস্ট্রেশন বিভাগ একত্র হয়েছে। ফলে এসিটিও-দের প্রথামাফিক কাজ আর থাকছে না। তাই অফিসারদের অন্যত্র কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।