রাজ্যপালের বক্তৃতার উপরে বিতর্কেও কেন্দ্র বিরোধিতাতেই সুর চড়াল তৃণমূল।
কেন্দ্রের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের সমালোচনা ঘুরেফিরে এল মঙ্গলবার বিধানসভায়। কেন এখনও এ রাজ্যের তিন বিজেপি সাংসদ নিজেদের এলাকার জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্প আনতে ব্যর্থ, তা নিয়েও প্রশ্ন তুললেন শাসক দলের বিধায়কেরা। দার্জিলিঙের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া, আসানসোলের বাবুল সুপ্রিয় বা রাজ্যসভার রূপা গঙ্গোপাধ্যায়েরা কেউই এখনও কেন্দ্রীয় বরাদ্দ অনুমোদন করাতে পারেননি বলে রাজ্যপালের ভাষণের উপরে বিতর্কে অংশ নিয়ে অভিযোগ করেন তালড্যাংরার তৃণমূল বিধায়ক সমীর চক্রবর্তী। রাজ্য বিজেপির সভাপতি ও খড়্গপুরের বিধায়ক দিলীপ ঘোষের এলাকার উন্নয়নের জন্যও কেন্দ্র অর্থ বরাদ্দ করেনি বলে সমীরবাবুর অভিযোগ। গত লোকসভা ও বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যে এসে প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু দার্জিলিং, আসানসোল বা খড়্গপুরে বিজেপি জেতার পরেও এলাকাগুলির জন্য মোদী সরকার ন্যূনতম অর্থ সাহায্য না দেওয়ায় সংশ্লিষ্ট সাংসদ ও বিধায়কদের ইস্তফা দাবি করেন সমীরবাবু।
নোট বাতিলের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিবাদ করায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে প্রতিহিংসার শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। তৃণমূল জমানায় নতুন শিল্প হচ্ছে না বলে এ দিন অভিযোগ করেন বিরোধীরা। জবাবে প্রবীরবাবু বলেন, ‘‘বাম আমলে ২৩ বছর তো এক জন মুখ্যমন্ত্রী শিল্পের নাম করে গরমের সময় বিদেশে ঘুরতে যেতেন!’’
ভাঙড়, আউশগ্রাম, বোলপুরের সাম্প্রতিক ঘটনায় তৃণমূলকে পাল্টা আক্রমণ করেন বিরোধীরা। ভাঙড়ে রাজ্য বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জমি অধিগ্রহণ করেছিল বলে দাবি করেন কংগ্রেসের অসিত মিত্র এবং বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী। অধিগ্রহণের নথি বিধানসভায় দেখিয়ে সুজনবাবু প্রশ্ন তোলেন, ‘‘কেন তা হলে আপনারা বলছেন যে, ভাঙড়ে অধিগ্রহণ হয়নি? কোনটা ঠিক, সেটা বলছেন না কেন? আর রাজ্যপালের ভাষণেই বা তার উল্লেখ নেই কেন?’’ ভাঙড়ে নিহত দুই যুবকের কথাও কেন রাজ্যপালের বক্তৃতায় উল্লেখ করা হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস বিধায়ক ফিরোজা বিবি। ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক সওকত মোল্লার পাল্টা অভিযোগ, সুজনবাবু এবং অধীর চৌধুরী ভাঙড়ে গিয়ে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। রাজ্যপালের ভাষণের উপরে বিতর্ক শেষে আজ, বুধবার জবাব দেওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।