মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম আদালতে ধৃতেরা। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।
জনগণের কমিটির নেতা ছত্রধর মাহাতোর মুক্তির দাবিতে পোস্টার সাঁটানোর দায়ে ‘সিপিআই (এমএল) পিসিসি’-এর ৩ জন নেতা-কর্মীকে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেফতার করা হল। রবিবার ওই তিন জনকে আটক করার ২৪ ঘণ্টা পরেও তাঁদের আদালতে তোলা হয় নি বলে সোমবার সংবাদ মাধ্যমে অভিযোগ করেছিলেন ‘সিপিআই (এমএল) পিসিসি’-এর সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ রানা। এরপরই মঙ্গলবার ‘সিপিআই (এমএল) পিসিসি’-এর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন বেরা এবং ওই সংগঠনের দুই কর্মী সুনীল বারিক ও জিতেন গিরিকে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় অভিযুক্ত করে ঝাড়গ্রাম প্রথম এসিজেএম আদালতে হাজির করে পুলিশ। নিরঞ্জনবাবুর বাড়ি ঝাড়গ্রামের লোধাশুলি এলাকায়। সুনীলবাবু ও জিতেনবাবুর বাড়ি সাঁকরাইলের রোহিনীতে।
এদিন আদালতে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সোমবার দুপুরে ওই তিন জনকে ঝাড়গ্রামের লোধাশুলি এলাকায় সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে ধরা হয়। ধৃতদের কাছ থেকে একটি পলিথিনের প্যাকেটের মধ্যে থাকা বেশ কিছু মাওবাদী পোস্টার ও পুস্তিকা বাজেয়াপ্ত করা হয়। এরপরই ধৃতদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ ও ষড়যন্ত্রের ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায় পুলিশ। ভারপ্রাপ্ত বিচারক টি কে প্রধান তিন অভিযুক্তকেই ছ’দিনের জন্য পুলিশ হেফাতকে রাখার নির্দেশ দেন। অভিযুক্তদের আইনজীবী অশ্বিনী মণ্ডল বলেছেন, “আমার মক্কেলদের পরিকল্পিতভাবে সাজানো মামলায় ফাঁসিয়েছে পুলিশ। ১৭ মে ওই তিনজনকে ধরার পরে বেআইনি ভাবে ২৪ ঘন্টার বেশি সময় আটক করে রাখা হয়েছিল।” সিপিআই (এমএল) পিসিসি’-এর সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ রাণ বলেন, “অবিলম্বে ওই মামলা প্রত্যাহার করে ধৃতদের মুক্তি দেওয়া না হলে আমরা গণতান্ত্রিক পথে জোরদার আন্দোলন করব।” গত শনিবার ইউএপিএ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ছত্রধরের মুক্তির দাবিতে ঝাড়গ্রাম শহরের বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার পড়ে। সিপিআই (এমএল) পিসিসি এবং এপিডিআর-এর নামাঙ্কিত পোস্টারগুলি পরে অবশ্য পুলিশ গিয়ে ছিঁড়ে দেয়। তারপরই রবিবার নিরঞ্জনবাবু-সহ তিন জনকে পুলিশ আটক করে বলে অভিযোগ ওঠে।