বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। ফাইল চিত্র।
তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চটকদার বার্তা দিল রাজ্য বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের আহ্বান, সিপিএম, কংগ্রেস থেকে শুরু করে তৃণমূলে যাঁরা ‘সৎ’, সকলে মিলে বিজেপির ঝান্ডার নীচে এসে এই সরকারের বিরুদ্ধে জোট গড়তে হবে। এ নিয়ে সব দলই কটাক্ষ ও সমালোচনায় সরব। বিজেপির মধ্যেও বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বিভ্রান্তি দেখা যাচ্ছে।
সমাজমাধ্যমে বুধবার সুকান্ত লেখেন, “সময় এসেছে বিজেপি, তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেস ভেদাভেদকে দূরে সরিয়ে রেখে বাংলার স্বার্থে ১০ কোটি বাঙালির স্বার্থে সকল শ্রেণির সকল স্তরের মানুষকে একত্রিত হয়ে ভয়ের গ্যাস চেম্বার থেকে বেরিয়ে এসে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ভুল নীতি, খামখেয়ালিপনা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার এবং সরকারকে আয়না দেখানোর।” নিজে ওই পোস্টের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, “দেশ ও রাজ্যের প্রেক্ষিত আলাদা। নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলেছে। আর রাজ্যের একের পর এক মন্ত্রী দুর্নীতির দায়ে জেলে যাচ্ছেন। তাঁদের ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি উদ্ধার হচ্ছে। তাই এই মুহূর্তে রাজ্যকে বাঁচাতে হবে। সেই লক্ষ্যে সকলকে এক ছাতার তলায় এসে লড়তে হবে।” তাঁর যুক্তি, “আমি তো বলিনি কংগ্রেসের ঝান্ডা নিয়ে, সিপিএমের ঝান্ডা নিয়ে বিজেপির সঙ্গে জোট করতে। আমরা সেই দলের কর্মীদের, এমনকি, তৃণমূলের মধ্যেও যাঁরা সৎ আছেন, তাঁদের বলছি আপনারা রাজনৈতিক বিরোধ ভুলে বিজেপির ঝান্ডা ধরুন। আগে সরকারটা পাল্টান। তার পর মনে হলে, যে যাঁর দলে ফিরে যাবেন!” যদিও রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “বিজেপি একার শক্তিতেই তৃণমূলকে হারাতে সক্ষম। উনি হয়তো বলতে চেয়েছেন, এই মুহূর্তে গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধার সব চেয়ে জরুরি। ” তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র তাপস রায় বলেন, ‘‘এ নতুন কিছু নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে জগাই-মাধাই-বিদাইয়ের এই জোট তো আছেই! ২০১৬ এবং ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে তারা মিলিত ভাবে মমতাকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করেছে। মানুষের প্রতিরোধের সামনে পারেনি। ’’ বাম জমানায় সিপিএমের বিরুদ্ধে পঞ্চায়েতে বিজেপিকে নিয়ে এমন ‘মহাজোটে’র কথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, তা স্মরণ করিয়ে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘বাংলায় তৃণমূল যা করছে এবং গোটা দেশে বিজেপি যা করে বেড়াচ্ছে, তার বিরুদ্ধে মহাজোট চাই।’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর মন্তব্য, ‘‘নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা কংগ্রেসমুক্ত ভারত গড়ার লক্ষ্যে যা নয়, তা-ই করছেন! আর এখানে এ সব কথার কী মানে আছে?’’