সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
জমি আন্দোলনের আঁতুড়ঘরে দাঁড়িয়েই আগামী বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামের প্রার্থী হওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ঘোষণার সপ্তাহ কয়েক পরেই নন্দীগ্রাম সফরে আসছেন তৃণমূলের প্রবীণ নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর, ফেব্রুয়ারির শুরুতেই নন্দীগ্রামে তিনদিনের সফরে এসে সুব্রত একাধিক কর্মী বৈঠক করবেন। তৃণমূলের জেলা কো অর্ডিনেটর তথা বিধায়ক অখিল গিরি বলেন, ‘‘আগামী ২ ফেব্রুয়ারি পঞ্চায়েত মন্ত্রী নন্দীগ্রামে আসছেন। থাকবেন ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। উনি নন্দীগ্রামে এসে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলবেন। কর্মী সভা করার কথাও রয়েছে।’’ নন্দীগ্রামের কর্মসূচির কথা স্বীকার করে সুব্রত বুধবার বলেন, ‘‘ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নন্দীগ্রামে যাব। কিন্তু দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি। একাধিক কর্মী বৈঠকের কর্মসূচি রয়েছে।’’
মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার পরেই নন্দীগ্রামের কেন্দেমারি-সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রার্থী হিসাবে তাঁর নামে দেওয়াল লিখন শুরু হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর পুরনো বিধানসভা এলাকা নন্দীগ্রামে সুব্রতর মতো পুরনো তৃণমূল নেতা আসলে ‘জল মাপতে’ আসছেন বলেই ব্যাখ্যা রাজনৈতিক মহলের। নন্দীগ্রামের রাজনীতির সঙ্গে তাঁর সরাসরি যোগাযোগ না থাকলেও, তাঁকেই কেন পাঠানো হচ্ছে জমি আন্দোলনের আঁতুড়ঘরে! পঞ্চায়েত মন্ত্রীর জবাব, ‘‘সাম্প্রতিক যে ঘটনাক্রম তাতে নন্দীগ্রাম এখন নজরবন্দি। দল আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে। নেত্রী আমাকে বলেছেন, ওখানে গিয়ে কর্মীদের মনোভাব বুঝতে। তাই যাচ্ছি।’’
অবশ্য এ ব্যাপারে রাজনৈতিক মহলের একাংশের ব্যাখ্যা, তৃণমূলে সাম্প্রতিক কালে যে হারে নেতানেত্রীরা দল ছাড়ছেন, তাতে পুরনো নেতাদের উপরেই নেত্রীকে এখন ভরসা করতে হচ্ছে। এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না পূর্ব মেদিনীপুরের বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি প্রলয় পাল বলেন, ‘‘যে হারে লোকে তৃণমূল ছেড়ে পালাতে শুরু করেছেন, তাতে হাতে গোনা লোকজনই পড়ে রয়েছন। ফলে তাঁদের উপরে ভরসা করা ছাড়া, তৃণমূল নেত্রী উপায়ই বা কী। আর নন্দীগ্রামের মনোভাব আগাম বুঝেও ওদের আদতে কিছু লাভ হবে না।’’