ফাইল চিত্র।
তাঁর সইয়ের অভাবে হাওড়া পুরসভা থেকে বালি পুরসভাকে আলাদা করার বিল আটকে আছে। তার উপরে বিভিন্ন বিষয়ে একের পর এক নথি তলব করতে থাকায় রাজ্যপালের ‘এক্তিয়ার’ নিয়েই প্রশ্ন উঠছে রাজ্য প্রশাসনের অন্দরে। বিশেষত সরকারের দৈনন্দিন কাজকর্মের বিষয়ে তথ্য চেয়ে পাঠাতে থাকায় ধনখড় এখন বিতর্ক-সমালোচনার কেন্দ্রে। তথ্য তলবের সাম্প্রতিকতম ঘটনাটি ঘটেছে ভিন্ন পেশা থেকে সরকারি দফতরে সিনিয়র পরামর্শদাতা বা পরামর্শদাতা নিয়োগের ক্ষেত্রে। রাজ্য সরকার যে-পদ্ধতিতে বেসরকারি ক্ষেত্রের পরামর্শদাতা নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেই বিষয়ে প্রশ্ন তুলে তথ্য তলব করেছেন রাজ্যপাল। এই ব্যাপারে যাবতীয় তথ্য-সহ রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে রাজভবনে ডেকে পাঠিয়েছেন তিনি।
পরামর্শদাতা নিয়োগের কথা গত ২৬ নভেম্বর জানিয়েছিল রাজ্যের কর্মিবর্গ ও প্রশাসনিক সংস্কার দফতর (পার)। রাজভবন মনে করছে, এই নিয়োগের পদ্ধতি প্রশ্নাতীত নয়। রাজভবন জানাচ্ছে, নিয়োগ-পদ্ধতির স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কিছু ক্ষেত্রে নিয়োগ-পদ্ধতির উপরে বিচার ব্যবস্থারও ‘নজর’ রয়েছে। ৭০ বছরের কোনও ব্যক্তি কী ভাবে এই পদের জন্য আবেদন করতে পারেন, সেই প্রশ্নও তুলছে রাজভবন।
ধনখড়ের তরফে তথ্য তলবের ঘটনা এই প্রথম নয়। রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি বিষয়ে অতীতে বারংবার তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সাম্প্রতিক অতীতে পেগাসাস তদন্ত কমিশন এবং এ বার পরামর্শদাতা নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালের তথ্য চেয়ে পাঠানোর বিষয়টিকে ভাল ভাবে নিচ্ছেন না প্রশাসনিক কর্তাদের অনেকেই। তাঁদের বক্তব্য, রাজ্যপাল পদটি পুরোপুরি আলঙ্কারিক। প্রতিনিয়ত সরকারের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলা রাজভবনের কাজ নয়। বিষয়টি রাজ্যপালের এক্তিয়ারে পড়ে না।
অভিজ্ঞ আমলাদের অনেকে অবশ্য এটাও জানাচ্ছেন যে, রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হলেন রাজ্যপাল। সরকারের যে-কোনও আদেশনামা বা নিয়োগ হয় রাজ্যপালের নামে। সেই দিক থেকে তিনি তথ্য চাইতেই পারেন। তবে রাজভবনের ডাকে রাজ্য সরকার কত দূর পর্যন্ত সাড়া দেবে, তা নিয়ে চর্চা হতেই পারে। রাজ্যের মন্ত্রী ও কলকাতার নতুন মেয়র ফিরহাদ (ববি) হাকিমের প্রতিক্রিয়া, “রাজ্যপালের এক্তিয়ারই নেই। রাজ্য প্রশাসন কী ভাবে চলবে, সেটা পুরোপুরি মুখ্যমন্ত্রীর এক্তিয়ার। রাজ্যপাল সাংবিধানিক প্রধান, রাজ্য সরকারের নয়। বড় জোর তিনি সরকারকে পরামর্শ দিতে পারেন, তথ্য তলব করতে পারেন না। বিজেপির কথায় উনি এ-সব করছেন।”