মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
শাসক দলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বা টিএমসিপি-র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আগামী ২৮ অগস্ট কলকাতা ময়দানে গাঁধী-মূর্তির পাদদেশে ছাত্র সমাবেশে রয়েছে। প্রধান বক্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সমাবেশকে সামনে রেখেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে প্রচার মিছিল ও সভা করছে টিএমসিপি। সোমবার তেমনই একটি সভায় হাজির থাকলেন মধ্যমগ্রাম বিবেকানন্দ কলেজের অধ্যক্ষ চন্দনকুমার চক্রবর্তী।
কলেজের সেমিনার রুমে ওই সভা হয়েছে দেওয়ালে টিএমসিপি-র ছাত্র সমাবেশের ব্যানার ঝুলিয়ে। সভায় জেলা টিএমসিপি নেতাদের মাঝখানে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে অধ্যক্ষকে। কলেজের অধ্যক্ষ কী ভাবে একটি ছাত্র সংগঠনের প্রচার কর্মসূচির শামিল হলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও অধ্যক্ষের দাবি, ‘‘ওটা ছিল ছাত্রদের সভা।’’ কিন্তু সব ছাত্রই কি একটি সংগঠনের মধ্যে রয়েছেন যে, এ দিনের সভাকে কলেজের ছাত্রদের বৈঠক বলা যায়? এই প্রশ্নের সুস্পষ্ট উত্তর দিতে পারেননি অধ্যক্ষ।
তবে টিএমসিপি আয়োজিত ওই সভায় চন্দনবাবু সারা ক্ষণ ছিলেন না। তিনি কিছু ক্ষণের জন্য সেখানে গিয়েছিলেন বলে অধ্যক্ষের দাবি। তিনি বলেন, ‘‘ছাত্রদের কলেজের ইতিহাস বলেছি। ছাত্রছাত্রীরা এখন কী ভাবে শিক্ষা ক্ষেত্রে সুযোগ পাচ্ছেন, তা শুনিয়েছি। একদা স্টাইপেন্ডের সমস্যা হওয়ায় অনেক ছাত্রছাত্রীই আমার কাছে আসত। এখন আর সেই সমস্যা নেই। ছাত্রছাত্রীরা আসে না।’’ অধ্যক্ষকে পাশে বসিয়ে মধ্যমগ্রাম কলেজের প্রশংসা শোনা গিয়েছে টিএমসিপি-র উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি বাণীব্রত চক্রবর্তীর মুখে। শিক্ষা ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে পরিবর্তনের কথাও বলেন তিনি। কিন্তু ছাত্র সংগঠনের সভায় অধ্যক্ষ কেন, এই প্রশ্নের জবাবে বাণীব্রত বলেন, ‘‘আমি এই বিষয়ে কী বলতে পারি! তিনি যদি এসে থাকেন...।’’
পুরো বিষয়টি না-জেনে কোনও মন্তব্য করতে চাননি টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য। এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘স্যর (অধ্যক্ষ) কী কারণে ওই সভায় গিয়েছেন, তা না-জেনে কিছু বলতে পারব না। তিনি কোনও সেমিনারে যেতেই পারেন। কিন্তু টিএমসিপি-র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রচার কর্মসূচিতে তাঁর হাজির থাকা নিন্দনীয়।’’ একই সঙ্গে সৃজন জানান, শিক্ষা ক্ষেত্রে শিক্ষক-অধ্যাপকেরা যে-ভাবে নিগৃহীত হচ্ছেন, চন্দনবাবু সেই ভয়েও ওই সভায় গিয়ে থাকতে পারেন। অধ্যক্ষ যদি সব জেনে টিএমসিপি-র সভায় গিয়ে থাকেন, তা হলে তিনি নিজের পদের অমর্যাদা করেছেন বলে মন্তব্য করেন সৃজন।