হঠাৎ করেই একটি রাস্তার নৈশ পুলিশ প্রহরা তুলে নেওয়া হয়েছিল। যার জেরে ওই রাস্তায় বন্ধ হয়ে যাওয়া চুরি-ছিনতাই বেড়েই চলেছে বলে এলাকার মানুষের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, গত সপ্তাহেই পর পর দু’দিন রাতে ওই রাস্তায় গাড়ি আটকে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। সাঁইথিয়ার রোঙ্গাইপুর-পুরন্দরপুর রাস্তার এক নম্বর ক্যানালের সেতুর উপর ওই ছিনতাইয়ের ঘটনার পরে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে এলাকায়। যদিও এ নিয়ে পুলিশের কাছে এখনও কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে, নৈশ প্রহরা উঠে যাওয়ায় চুরি-ছিনতাই বেড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন স্থানীয় মাঠপলসা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মহম্মদ ইউনুস।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সাঁইথিয়া-সিউড়ি রাস্তার রোঙ্গাইপুর থেকে সিউড়ি-আমোদপুর বা সিউড়ি-বোলপুর রাস্তার পুরন্দরপুর পর্যন্ত একটি রাস্তা চলে গিয়েছে। একসময় ওই রাস্তায় চুরি-ছিনতাইয়ের উপদ্রব খুব বেশি ছিল। এলাকাবাসী থেকে গাড়ি চালকদের দুষ্কৃতীরা ব্যতিব্যস্ত করে তুলেছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি মেনে দীর্ঘ দিন আগে ওই রাস্তায় সারা রাত পুলিশ প্রহরার ব্যবস্থা করে জেলা পুলিশ। রোঙ্গাইপুরের কাছে মাজিগ্রামের আগে একটি ঘরে পুলিশ পাহারায় থাকত। সেই ঘর থেকেই সারা রাত চলত রাস্তা পাহারার কাজ। ফলে চুরি-ছিনতাই এক রকম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বললেই চলে। এলাকার পরিসর গ্রামের বাসিন্দা দ্বারিকানাথ চক্রবর্তী, রোঙ্গাইপুর গ্রামের সাইদুর রহমান-রা বলেন, “আমাদের দাবি মেনে দীর্ঘ দিন আগে এই রাস্তায় পুলিশ প্রহরার ব্যবস্থা করেছিল পুলিশ-প্রশাসন। কিন্তু হঠাৎ কী কারণে এই রাস্তা থেকে পুলিশ প্রহরা তুলে নেওয়া হল সেটাই বুঝতে পারছি না।”
স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রোঙ্গাইপুরের বাসিন্দা মহম্মদ ইউনুস জানান, পুলিশ প্রহরা শুরু হওয়ায় ওই রাস্তায় এবং এলাকাতেও চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা কমে গিয়েছিল। কিন্তু বছর খানেক আগে হঠাৎ-ই রাস্তা থেকে পুলিশ প্রহরা তুলে নেওয়া হয়। তাঁর ক্ষোভ, “কী কারণে পুলিশ তুলে নেওয়া হল, সে সম্পর্কে স্থানীয় প্রশাসক হিসাবে পঞ্চায়েতকেও কিছু জানানো হয়নি।” তাঁরও অভিযোগ, পুলিশ তুলে নেওয়ার পর থেকে মাঝে মধ্যেই ওই রাস্তায় চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেই চলেছে। উপপ্রধান বলেন, “গত সপ্তাহেই পর পর দু’রাত এক নম্বর ক্যানালের সেতুর কাছে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। ট্রাক চালকদের সর্বস্ব লুঠ করে নেয় ছিনতাইকারীরা। যে কোনও কারণেই হোক চালকরা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাননি।” তবে, পঞ্চায়েত থেকে ওই রাস্তায় ফের পুলিশ প্রহরার ব্যবস্থা করার জন্য জেলা পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এ দিকে, পুলিশের দাবি, গত সপ্তাহে ওই রাস্তায় ছিনতাইয়ের ঘটনার কথা তারা জানে না। কোনও অভিযোগও দায়ের হয়নি। জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, “পুলিশ কর্মীর অভাবেই ওই রাস্তা থেকে পুলিশ তুলে নেওয়া হয়েছে।” তবে, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনন্দ পাল বলেন, “বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।”