বচসার জেরে মারধরের ঘটনায় গ্রেফতার হলেন পুরুলিয়া শহরের একটি হোটেলের পাঁচ কর্মী। রবিবার সন্ধ্যায় শহরের ভবতারণ সরকার রোডের একটি হোটেলের ওই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে পুরুলিয়া জেলা আদালতের দুই আইনজীবীরও। তাঁদের এক জন বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক তাপস মাহাতো এবং অন্য জন অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম কর্মকর্তা তথা শহর কংগ্রেসের সভাপতি বিশ্বরূপ পট্টনায়ক। মারধরে বিশ্বরূপবাবুর মাথায় চোট লাগায় তাঁকে রবিবারই সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনার পরে রবিবার রাতে বিশ্বরূপবাবু হোটেল কর্মীদের পাশাপাশি হোটেলের মালিক ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের করেছেন। কর্মীদের পাশাপাশি তাঁদেরও গ্রেফতার করতে হবে বলে দাবি করেছে পুরুলিয়া বার অ্যাসোসিয়েশন। এই দাবিতে তারা সোমবার এক দিনের প্রতীকী কর্মবিরতিও পালন করে। জেলা পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীরকুমার বলেন, “দু’পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। সংশ্নিষ্ট হোটেলের পাঁচ কর্মীকে ধরা হয়েছে।”
বিশ্বরূপবাবু এ দিন বলেন, “আমি ও আমার এক বন্ধু ওই হোটেলের বাইরে দাঁড়িয়ে জেলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলছিলাম। সে সময় হোটেলের এক কর্মী আমাদের উদ্দেশে টিটকারি দেন। আমরা প্রতিবাদ করতেই বাদানুবাদ শুরু হয়। সে সময় হোটেলের মালিক আমাদের ভিতরে ডাকেন।” তাপসবাবুর কথায়, “আমি বিশ্বরূপবাবুকে ওখানে নামিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিলাম। ফোন পেয়ে ফিরে এসে দেখি তাঁকে মারধর করা হচ্ছে।” বিশ্বরূপবাবুর দাবি, তাঁদেক ভাঙা বোতল দিয়ে মাথায় মারা হয়।
অন্য দিকে হোটেলের মালিকের ছেলে মোহিত লাটার বক্তব্য, “ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন ওই আইনজীবীরা। ঘটনাটি ঘটেছিল হোটেলের পানশালায়। ওই দু’জন একটু নুন চেয়েছিলেন আমাদের এক কর্মীর কাছে। ওই কর্মী হোটেলের পাচক। তিনি তখন টিভিতে আইপিএলের খেলা দেখছিলেন। তিনি তাঁদের বলেন, ওয়েটারকে নুন আনার কথা বলতে। এর পরেই মারামারি বেধে যায় বলে শুনেছি।” মোহিতবাবুর আরও দাবি, পুরো ঘটনাটাই ঘটেছে ক্রেতার সঙ্গে কর্মীদের। এর মধ্যে অহেতুক তাঁকে ও তাঁর বাবাকে জড়ানো হয়েছে।
তাপসবাবু ও বিশ্বরূপবাবুর পাল্টা বক্তব্য, “ঘটনা অন্য দিকে ঘোরাতেই এ কথা বলা হচ্ছে।” পুরুলিয়া হোটেল অ্যান্ড লজ কিপার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কালীশঙ্কর দীক্ষিত বলেন, “ঘটনাটি বিশদে জানি না। তবে যা ঘটেছে, তাতে হোটেল কর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আমরা বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসব।”