সিপিএম প্রভাবিত সংগঠন ছেড়ে তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনে নাম লেখালেন জেলার প্রায় তিনশো শিক্ষক। যোগদানকারীদের মধ্যে সিপিআই প্রভাবিত ‘বেঙ্গল প্রাইমারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনে’র জেলা সম্পাদকের পাশাপাশি সিপিএমের এক লোকাল কমিটির সদস্যও রয়েছেন। শনিবার সাঁইথিয়ার রবীন্দ্রভবনে আনুষ্ঠানিক ভাবে সাঁইথিয়া এলাকার ওই প্রাথমিক শিক্ষকেরা ‘পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি’র সঙ্গে যুক্ত হন। নীতিগত কারণেই তাঁরা আগের সংগঠন ছেড়েছেন বলে জানিয়েছেন। তবে, সিপিএম প্রভাবিত এবিপিটিএ-র (অল বেঙ্গল প্রাইমারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন) জেলা নেতৃত্বের দাবি, ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির জন্যই সংগঠনের ওই সদস্যেরা রং পাল্টেছেন। এ দিন কংগ্রেস ও সিপিআই-এর প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের কয়েক জন নেতা-কর্মীও শাসক দলের ওই শিক্ষক সংগঠনে নাম লিখিয়েছেন।
শনিবার বিকেলের ওই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি তথা রাজ্যের মৎস্য মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, সাঁইথিয়ার পুরপ্রধান বিপ্লব দত্ত, পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি সন্দীপন নারায়ণ দত্ত প্রমুখ। চন্দ্রনাথবাবুর হাত থেকে দলীয় পতাকা নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন সিপিএম প্রভাবিত ডব্লুবিপিটিএ-র সাঁইথিয়া চক্রের নেতা উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়, সিপিআই-এর বিপিটিএ-র জেলা সম্পাদক সন্দীপন দাস ও কংগ্রেসের ডব্লুবিপিটিএ-র সাঁইথিয়া চক্রের সম্পাদক নকুল ঘোষ। সংগঠন ছাড়ার কারণ হিসেবে উজ্জ্বলবাবু বলেন, “আগের সংগঠনে ব্যক্তিস্বার্থ প্রাধান্য পাচ্ছে। নীতি-আদর্শও সঙ্কীর্ণ হচ্ছে। এই সব নানা কারণে ওই শিক্ষক সংগঠন ছেড়ে বেরিয়ে এসেছি।” উজ্জ্বলবাবু সিপিএমের সাঁইথিয়া লোকাল কমিটির সদস্য ও স্থানীয় চার নম্বর ব্রাঞ্চের সম্পাদকের দায়িত্বেও ছিলেন। সংগঠন ছাড়ার পাশাপাশি দলের সদস্যপদও ছেড়েছেন বলে জানিয়েছেন। তাঁরই সঙ্গে তৃণমূলে যোগ দেন আরও তিন সিপিএম পার্টি সদস্য এবং সাত কর্মী। দল ও সংগঠন ছাড়া নিয়ে উজ্জ্বলবাবুর সঙ্গেই সুর মিলিয়েছেন সন্দীপন দাস এবং নকুলচন্দ্র মণ্ডলও। এ দিকে, বাম সংগঠন থেকে আসাদের দলে নেওয়ার প্রসঙ্গে চন্দ্রনাথবাবু বলেন, “তৃণমূল দলে যোগ্য ব্যক্তিদের সম্মান দেওয়া হয়। দলে নতুন-পুরনো বলে কিছু নেই।” এই দল বদল আসন্ন সাঁইথিয়া পুরসভার নির্বাচনে দলের নেতা-কর্মীদের মনোবল আরও বাড়াবে বলেই তাঁর দাবি।
অন্য দিকে, সাঁইথিয়ার নেতা-কর্মীদের ওই দলবদল নিয়ে এবিপিটিএ-র জেলা সম্পাদক সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “কে কোন দল করবেন, কোন সংগঠনে থাকবেন, তা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে, আমরা জানি, কেউ কেউ শাসক দলে থাকতে ভালবাসেন। আবার কেউ কেউ নিজেদের স্বার্থের জন্য দল বা সংগঠন পাল্টে ফেলেন।”