রবিবার রাতভর তিনি বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোক থানায় ডায়েরি করেছিলেন। তখনও বাড়ির সদস্যেরা জানতেন না, তিনি খুন হয়েছেন। জানলেন সোমবার সন্ধ্যায়, যখন পুরুলিয়ার হুড়া থানার ফোন এল বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি থানায়। জানা গেল, সোমবার সকালে হুড়া থানা এলাকার লধুড়কা-কাশীপুর রাস্তার পাশে বাহুকাটা গ্রামর অদূরে ঝোপের কাছে যে যুবকের দেহ মিলেছিল, তাঁর নাম তপন গরাই (৩৯)। বাড়ি বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাঁটি থানা এলাকার রাধাকৃষ্ণপুরে।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের সন্দেহ, বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে বাঁকুড়ার তিলাবেদিয়ার জঙ্গলে এই যুবককে খুন করে পুরুলিয়ায় এনে তাঁর দেহ ফেলে দেওয়া হয়েছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ গঙ্গাজলঘাটির বিভিন্ন গ্রাম থেকে পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করে। ধৃত অপু গোস্বামী, মানিক দাস ও গোপন বাউরির বাড়ি রাধাকৃষ্ণপুরেরই কাছাকাছি এলাকায়।
সোমবার সকালে ওই যুবকের দেহ পড়ে থাকতে দেখেন বাহুকাটা গ্রামের মানুষজন। তপনের পরনে ছিল কালো ট্রাউজার্স ও কমলা টি শার্ট। গলায় একটি দাগ ছিল। ধারালো অস্ত্রের দাগ না হলেও প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা হয়, এই ব্যক্তিকে শ্বাসরোধ করে খুন করে এখানে ফেলে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবেই দেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠায়। ও দিকে, রবিবার সন্ধ্যেবেলায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাতে বাড়ি না ফেরায় তপনের বাড়ির লোকজন গঙ্গাজলঘাটি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। সোমবার সন্ধ্যার পরে গঙ্গাজলঘাটি থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে তপন গরাইয়ের পরিচয় পায় হুড়া থানার পুলিশ। এর পরে ওই তিন জনকে ধরা হয়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ধৃত তিন জনের কারও কাছ থেকে তপন বেশ কিছু টাকা পেতেন। কিন্তু তপনের প্রাপ্য টাকা দিতে তাঁরা টালবাহানা করছিলেন। টাকা না দিলে তিনি একটা হেস্তনেস্ত করবেন এমন হমকিও দিয়েছিলেন তপন। পুলিশ মনে করছে, সেই আক্রোশেই তপনকে খুন করা হয়েছে। তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে এসে বাঁকুড়া সদর থানার তিলাবেদিয়া জঙ্গলে খুন করে হুড়া থানা এলাকায় দেহ ফেলে
দেয় আততায়ীরা।
তবে তদন্তের স্বার্থে কী ভাবে অভিযুক্তদের ধরা হয়েছে, তা জানাতে চায়নি পুলিশ। মঙ্গলবার ধৃতদের পুরুলিয়া জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁদের চার দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।