বিধ্বস্ত: সন্তানদের কোলে নিয়ে শোকে ভেঙে পড়েছেন নিরঞ্জন গোপের স্ত্রী বৈশাখী। জয়পুরের ঘাগরা গ্রামে সোমবার। নিজস্ব চিত্র
বাড়ি থেকে মেরেকেটে এক কিলোমিটার দূরে পঞ্চায়েত অফিস। সেখানে বোর্ড গঠন চলছে। দলের অনেকেই গিয়েছেন। দুপুরে বাড়িতে ট্রাক্টর রেখে নিরঞ্জনও গিয়েছিলেন। জল খাচ্ছিলেন সামনের নলকূপে। হঠাৎ গুলি এসে লাগে কোমরের কাছে। এমনই দাবি করছেন তাঁর দাদা মনপূরণ গোপ।
সোমবার পুরুলিয়ার জয়পুরের ঘাগরা পঞ্চায়েতে গোলামালে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। তাঁদের এক জন নিরঞ্জন গোপ। ঘাগরা গ্রামের ব্রাহ্মণপাড়ায় থাকতেন। ট্রাক্টর চালকের কাজ করে সংসার চলত। গ্রামের থেকে আট কিলোমার দূরে পুন্দাগ। পাহাড় দেখা যায় পঞ্চায়েতের অফিসের সামনে থেকেই।
এ দিন বিকেলে গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, থমথম করছে পাড়া। নিরঞ্জনের বাড়ির সামনে ভিড় করেছেন পড়শি মহিলারা। আড়াই বছরের মেয়েকে কোলে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন স্ত্রী বৈশাখী। পাশেই বসে বছর পাঁচেকের ছেলে দেবাশিস। ঘটনার অভিঘাত পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারছে না সে। মণপূরণের দাবি, তাঁদের বাবা সক্রিয় বিজেপি কর্মী। নিরঞ্জনও বিজেপি সমর্থক ছিলেন। এ দিন প্রধান নির্বাচনের জন্য তাড়াতাড়ি কাজ সেরে বাড়ি চলে এসেছিলেন। ট্রাক্টর রেখে গিয়েছিলেন পঞ্চায়েত অফিসে। মণপূরণ বলেন, ‘‘হঠাৎ করে সব লন্ডভন্ড হয়ে গেল।’’
দামোদর মণ্ডলকে এ দিন যখন পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তখন প্রায় ৪টে বাজে। বিজেপি সূত্রের খবর, দামোদর পেশায় চাষি। এ দিন যখন তাঁকে সদর হাসপাতালের অপারেশন থিয়াটারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, দামোদর ছটফট করতে করতে বলছিলেন, ‘‘আমাকে ছেড়ে দে। আমি আর বাঁচব না।’’
অপারেশন থিয়েটারেই মৃত্যু হয় দামোদরের।