মিড-ডে মিল নিয়ে গ্রামের একাধিক গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদের জেরে দফায় দফায় তালা ঝুলল স্কুলের দরজায়। বাঁকুড়া ২ ব্লকের বাঁকিসেঁদড়া হাইস্কুলের ঘটনা। মিড-ডে মিলে রান্নার দায়িত্বে থাকা ওই গ্রামের একাধিক স্বনির্ভর গোষ্ঠীর লোকজন প্রথমে স্কুলের টিচার ইনচার্জকে অফিসের মধ্যে আটকে দরজায় তালা ঝুলিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা বিক্ষোভ দেখান। ছুটির পরে স্কুলের মূল দরজায় তালা ঝুলিয়ে শিক্ষকদের ভিতরে আটকে রেখেও ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভ চলে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক উত্তম মণ্ডল জানান, গ্রামের পাঁচটি গোষ্ঠী এক মাস করে রুটিন মাফিক মিড-ডে মিল চালাচ্ছে। সম্প্রতি গ্রামের আরও দু’টি গোষ্ঠী মিড-ডে মিলের দায়িত্ব পেতে দাবি করছে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে সমস্যা। ইতিমধ্যে যে পাঁচটি গোষ্ঠী স্কুলে রান্নার কাজ করছে তারা নতুন দু’টি গোষ্ঠীকে স্কুলে মিড-ডে মিলে রান্নার দায়িত্ব দিতে নারাজ। এই ঘটনার জন্য চার দিন ধরে স্কুলে মিড-ডে মিল রান্না করা যায়নি। স্কুলের ৫০০-র বেশি পড়ুয়া তাই দুপুরের খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ দিনও একই কারণে মিড-ডে মিল রান্না হয়নি স্কুলে। এ দিন স্কুলের মিড-ডে মিলের দায়িত্বে থাকা গোষ্ঠীর লোকজনেরাই বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বলে তিনি জানান।
প্রধান শিক্ষক বলেন, “এই সমস্যার কথা বিডিও-কে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। কয়েক বছর ধরেই গ্রামের বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে এই স্কুলে মিড-ডে মিল নিয়ে সমস্যা চলছে।” এ দিন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর লোকজনের বিক্ষোভের জেরে ছুটির পরেও স্কুলেই আটকে থাকতে হয় শিক্ষকদের।
আটকে থাকা শিক্ষকদের অনেকেই এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলেন, “দিনের পর দিন স্কুলে সমস্যা চলছে। ব্লক প্রশাসন সব জেনেও কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। প্রশাসনের সদিচ্ছা থাকলে এই সমস্যা মেটানো যেত।”
তবে বাঁকুড়া ২ বিডিও অমরেশচন্দ্র দাস বলেন, “স্কুলে বিক্ষোভের কথা শুনে আমি খোঁজ নিতে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু শিক্ষকদের তালা দেওয়ার ঘটনা আমাদের প্রতিনিধির নজরে আসেনি। স্কুলে যে মিড-মিল বন্ধ রয়েছে, তেমন খবরও নেই। ওই স্কুলে যখনই মিড-ডে মিল নিয়ে সমস্যা হয়েছে, তখনই আলোচনার মাধ্যমে আমরা সমাধান করেছি।’’ তাঁর সংযোজন, তবে অনৈতিক ভাবে কেউ যদি রান্নার দায়িত্ব নিতে আসে, তা স্কুলের পরিচালন কমিটিরই তা ঠেকানো দরকার বলে বিডিও স্পষ্ট করে দিয়েছেন। এ দিনের ঘটনা সম্পর্কে বিশদে তিনি খোঁজ নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।