বান্দোয়ানের কুইলাপাল প্রাথমিক স্কুলে। নিজস্ব চিত্র।
গ্রামের পরিচিত মানুষজন থেকে পঞ্চায়েত— গত কয়েক মাসে বিভিন্ন জনকে অনুরোধ করেছেন বান্দোয়ানের কুইলাপাল পঞ্চায়েতের পাহাড়পুর গ্রামের বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব রঙ্কিনী হাঁসদা। তাঁর আর্জি— মাথা গোঁজার জন্য একটা ঘর যদি পঞ্চায়েত থেকে করে দেওয়া হয়।
বৃদ্ধা জানান, তাঁর দুই ছেলে মারা গিয়েছেন। পড়শি এক নাতিকে নিয়ে তাঁর সাইকেলেই বৃদ্ধা রবিবার গিয়েছিলেন কুইলাপাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘দুয়ারে সরকার’-এর শিবিরে। তাঁর কথায়, ‘‘আমাকে দেখার কেউ নেই। ঘরের অবস্থা খুব খারাপ। বর্ষায় জল পড়ে। কষ্টে থাকি। অনেককে বলেছিলাম, সরকার থেকে ঘর করে দিচ্ছে, যদি আমাকেও একটা দেয়। গাঁয়ের লোকের কথায় শিবিরে এসে নাম লেখালাম। দেখি কবে ঘর মেলে।’’
স্থানীয় কড়মো গ্রাম থেকে বার্ধক্যভাতার জন্য শিবিরে এসে আবেদন করেন ষাটোর্ধ্ব কালীপদ মণ্ডল। আদিবাসী পেনশনের জন্য আবেদন করেন বাঁধবহাল গ্রামের বৃদ্ধ মথুর মান্ডি। শিবিরে ছিলেন বিডিও (বান্দোয়ান) কাসিফ সাবির। তিনি বলেন, ‘‘আবেদন নথিভুক্ত করা হচ্ছে। সমাধান করা হবে।’’
এ দিন রঘুনাথপুর শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কমিউনিটি হলের শিবিরে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের লাইনে আবেদনপত্র জমা করার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন স্থানীয় স্যাকারাপাড়ার কিরীটী গড়াই। তিনি বলেন, ‘‘ছেলে মারা গিয়েছে। চিকিৎসা করাতে পরিবারের সদস্যদের যাতে অসুবিধা না হয়, তাই এই কার্ড করাতে এসেছি।’’
ঝালদার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কমিউনিটি হলের শিবির রঙিন বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছিল। স্যানিটাইজ়ারের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছিল। তবে এ দিনের শিবিরে ভিড় তুলনায় কম ছিল। হলের বাইরে ঝালদা পুরসভার প্রশাসক সুরেশ আগরওয়াল, তৃণমূলের ঝালদা শহর সভাপতি দেবাশিস সেন প্রমুখ বসেছিলেন। পরে ওই শিবিরে যান জেলাশাসক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, মহকুমাশাসক (ঝালদা) সুবর্ণ রায়, এসডিপিও (ঝালদা) সুমন্ত কবিরাজ।
জেলাশাসক বিভিন্ন কাউন্টার ঘুরে লাইনে দাঁড়ানো মানুষজনের সঙ্গে কথা বলেন। জানতে চান কারও কোন অসুবিধা হচ্ছে কি না। জেলাশাসক বলেন, ‘‘এই কর্মসূচিতে সারা জেলায় ভাল সাড়া মিলছে।’’