—নিজস্ব চিত্র।
কুড়মিদের আদিবাসী স্বীকৃতির দাবির বিরোধিতা করে জঙ্গলমহলের বিভিন্ন জেলায় সমাবেশের পর এ বার কলকাতার পথে নামতে চলেছে আদিবাসীদের যৌথ মঞ্চ। ‘ইউনাইটেড ফোরাম অফ অল আদিবাসী অর্গানাইজেশনস’ নামে ওই সংগঠন আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর কলকাতার রানি রাসমণি রোডে একটি বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে। ওই দিন রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাতে স্মারকলিপি তুলে দেওয়ারও কথা ফোরাম নেতৃত্বের।
আদিবাসী স্বীকৃতির দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে কুড়মি সমাজ। পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঠিক আগে সেই আন্দোলন বড় আকার নিয়েছিল। নির্বাচনের পর সাময়িক বিরতি থাকলেও ২০ সেপ্টেম্বর থেকে লাগাতার পুরুলিয়ার কুস্তাউর ও পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলিতে রেল ও সড়ক অবরোধের ডাক দিয়েছিল কুড়মিরা। শেষ পর্যন্ত কলকাতা হাই কোর্ট এই আন্দোলনকে বেআইনি ঘোষণা করায় রেল ও সড়ক অবরোধ শেষ মুহুর্তে প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু কুড়মি নেতারা স্পষ্টই জানিয়েছেন, বিশেষ পরিস্থিতিতে এ রাজ্যে তাঁরা রেল ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি থেকে সরে এলেও আদিবাসী স্বীকৃতির দাবিতে তাঁদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। এই পরিস্থিতিতে সরকারকে চাপে রাখতে ২৯ সেপ্টেম্বর কলকাতার বুকে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিল আদিবাসীদের যৌথ মঞ্চ। সাঁওতাল, মুণ্ডা, ভূমিজ, সর্দার, শবর-সহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সংগঠনের মিলিত মঞ্চ এই ‘ইউনাইটেড ফোরামের’ তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কমপক্ষে এক লক্ষ আদিবাসী মানুষ এই বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দেবেন।
সোমবার বাঁকুড়ার জাহের থানে ইউনাইটেড ফোরামের তরফে দিলেশ্বর মান্ডি বলেন, ‘‘অআদিবাসী কুড়মিরা আদিবাসী স্বীকৃতির দাবিতে রাজ্য ও কেন্দ্রের সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। আমাদের আশঙ্কা, সেই চাপের কাছে নতিস্বীকার করে সরকার সিআরআই রিপোর্ট বিকৃত করতে পারে। তারই প্রতিবাদ-সহ অযোধ্যা পাহাড়ে টুরগা প্রকল্প বাতিল, দেউচা পাঁচামি প্রকল্প বাতিল এবং সর্বোপরি সমআইন কোড বাতিলের দাবি জানানো হবে।’’ ইউনাইটেড ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক তপনকুমার সর্দার বলেন, ‘‘চাপের কাছে মাথা নত করে ভোটের কথা ভেবে সিআরআই রিপোর্ট বিকৃত করার চেষ্টা হলে আমরা হাত গুটিয় বসে থাকব না। সে ক্ষেত্রে আমরা সরকারকে বুঝিয়ে দেব, ভোট কী ভাবে করতে হয়। রাসমণি রোডের এই বিক্ষোভ সমাবেশেই আমাদের আন্দোলন শেষ হয়ে যাচ্ছে না। আমাদের দাবিগুলি নিয়ে আমরা লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাব।’’