নির্বিঘ্নেই মিটল প্রথম পর্বের টিকাকরণ
COVID-19

দ্বিধা কাটাতে এগিয়ে এলেন স্বাস্থ্যকর্তারাই

স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করতে সাইথিয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে হাসপাতালের বিএমওএইচ আশিস চন্দ্র কোভিড টিকা নেন। একই ভাবে বোলপুর আর্বান পিএইচসি ২-এর একাধিক চিকিৎসক টিকা নিয়েছেন। 

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত 

সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২১ ০১:৩২
Share:

প্রস্তুতি: দুবপাজপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র।

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। শনিবার সারা দেশের সঙ্গে বীরভূমেও শুরু হল করোনাভাইরাসের টিকা দানের কর্মসূচি। শুরুতে সামান্য সংশয়, দ্বিধা থাকলেও তা কাটাতে নিজেরাই টিকা নেন স্বাস্থ্যকর্তারা। তারপরে কোনও বিঘ্ন ছাড়া স্বাভাবিক গতিতে চলেছে টিকাদান। যাঁরা টিকা নিয়েছেন তাঁরাও বাকিদের টিকা নিয়ে উদ্বুদ্ধ করেছেন।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এ দিন সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ আনুষ্ঠানিক ভাবে দেশ জুড়ে টিকাকরণ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। অন্যদিকে নবান্ন থেকে রাজ্যের ২০৭টি কেন্দ্রের টিকাকরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বীরভূমের দুই স্বাস্থ্য জেলার ১২টি কেন্দ্র টিকাকরণ শুরু হয় তারপরই।

রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার ময়ূরেশ্বর ১ ব্লকের মল্লারপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকাকরণ শুরু করা নিয়ে স্বাস্থ্য কর্মীদের মধ্যে জড়তা ছিল। তা জেনে আসেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান। তিনি নিজে টিকা নেওয়ার পরই কর্মসূচি স্বাভাবিক গতি পায়। স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করতে সাইথিয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে হাসপাতালের বিএমওএইচ আশিস চন্দ্র কোভিড টিকা নেন। একই ভাবে বোলপুর আর্বান পিএইচসি ২-এর একাধিক চিকিৎসক টিকা নিয়েছেন।

Advertisement

দেশ জুড়ে বিশেষ কর্মযজ্ঞের ঠিক আগে থেকে সম্পূর্ণ প্রস্তুত ছিল দুই স্বাস্থ্য জেলা ও প্রশাসনের কর্তারা। একেবারে শুরুর দিকে টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে টিকাপ্রাপকদের মধ্যে কিঞ্চিত জড়তা থাকলেও সেটা দ্রুত কেটে যায়। এগিয়ে এসে নিজেরাই টিকা নিয়ে অন্যদের সাহস জোগান স্বাস্থ্যকর্তারা। টিকা নেওয়ার পর কোনও সমস্যা না হওয়ায় টিকাপ্রাপকদের অনেকেই অন্যদের টিকা নিয়ে করোনাকে রোখার আহ্বান জানিয়েছেন।

বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার আওতায় থাকা সিউড়ি জেলা হাসপাতালের টিকাকরণ কেন্দ্রে এ দিন সকাল সাড়ে দশটার আগে থেকেই পৌঁছে গিয়েছিলেন স্বাস্থ্য জেলার সিএমওএইচ হিমাদ্রি আড়ি, সুপার শোভন দে-সহ স্বাস্থ্যকর্তারা। তবে টিকাকরণ শুরু হতে প্রায় ১১টা বেজে গিয়েছিল। কারণ প্রথম পর্বে স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত টিকাপ্রাপকদের তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের আসতে কিছুটা দেরি হয়েছিল। জেলা হাসপাতালে প্রথম টিকা নেন বেসরকারি চক্ষু হাসপাতালের কর্মী অভিজিত মণ্ডল। পরে দুপুর ১টা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীর ভিডিয়ো কনফারেন্সে টিকাকরণ কর্মসূচি পর্যবেক্ষেণের আগে এসে পৌঁছন জেলাশাসক। ততক্ষণে প্রায় ২৫জন প্রাপক টিকা নিয়ে নিয়েছেন।

প্রায়একই সময় বোলপুর মহকুমা হাসপাতাল ও রামপুরহাট মেডিক্যালে টিকাকরণ শুরু হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই নিজে টিকা নেন মেডিক্যাল কলেজের এমএসভিপি পলাশ দাস। অন্যদিকে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের করোনা টিকাকরণ কর্মসূচিতে টিকা নেন ডেপুটি সিএমওএইচ জয়ন্ত শুকুল ও সুপার বুদ্ধদেব মুর্মু।

জেলার ১২টি কেন্দ্রের প্রতিটিতে ১০০ জনকে টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার ৭টি কেন্দ্রে ৪০১ জনের ও রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার ৫টি কেন্দ্রে ২৫৪ জনের টিকাকরণ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ইলামবাজার ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ১১২ জন ও বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ১২১ জন টিকা নেন।

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যাঁরা টিকা নিলেন এ দিন তাঁদের ফুল দিয়ে সংবর্ধিত করা হয়। ২৮ দিন পরে প্রত্যেককে ফের টিকা নিতে আসতে হবে বলে দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে সতর্কবার্তা কোনও অসুবিধা হলে সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ করতেও বলা হয়েছে। যাঁরা টিকা নিলেন তাঁদের অধিকাংশই অবশ্য বলেছেন কোনও সমস্যা হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement