প্রতীকী ছবি।
ভিন্ রাজ্য থেকে কাজ হারিয়ে প্রচুর সংখ্যায় পরিযায়ী শ্রমিক জেলায় ফিরেছেন। তাঁদের কত জনকে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে যুক্ত করা গিয়েছে, প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে সেই তথ্য চাইল জেলা প্রশাসন। প্রকল্পেরর জেলা নোডাল অফিসার শুভঙ্কর ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘চলতি বছরে নতুন করে ৪৫ হাজার মানুষকে জবকার্ডের আওতায় আনা হয়েছে। তিন লক্ষ নব্বই হাজার পরিবারকে কাজ দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের অংশগ্রহণ কতটা, তা জানতেই পঞ্চায়েত থেকে ওই তথ্য চাওয়া হয়েছে।’’
দিন কয়েক আগে গোটা পঞ্চায়েত এলাকায় ৫৭ জন পরিযায়ী শ্রমিককে একই দিনে এক জায়গায় ১০০দিনের কাজে যুক্ত করে নজির গড়েছিল সিউড়ি ১ ব্লকের নগরী পঞ্চায়েত। পরিযায়ী শ্রমিকদের গোটা জেলার প্রতিটি পঞ্চায়েতে কাজে লাগলেও কোথায় কতজন শ্রমিক কাজ পাচ্ছেন সংগঠিতভাবে সেই তথ্য ছিল না। সেটাই পেতে চাইছে প্রশাসন।
ভিন্ রাজ্য থেকে কাজ হারিয়ে যে সব পরিযায়ী শ্রমিক বাংলায় ফিরেছেন, তাঁরা ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ পাবেন বলে আগেই ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। বলা হয়েছিল যাঁদের জবকার্ড নেই, আবেদনের ভিত্তিতে তাঁদের জবকার্ড দেওয়া হবে। কোনও পরিবারে জবকার্ড রয়েছে, অথচ কাজ হারিয়ে ভিন রাজ্য থেকে ফেরা পরিবারের সদস্যের নাম তাতে অন্তর্ভুক্ত না থাকলে সেটা দ্রুত করে কাজ দিতে বলা হয়েছিল। তবে সব ক্ষেত্রে সেই নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালিত হয়েছে এমনটা নয়। বীরভূমে জেলায় ৩৫ হাজারেরও বেশি শ্রমিক ফিরেছেন। তাঁদের কত শতাংশ ১০০ দিনের কাজে যুক্ত হয়েছেন তা এখনও সঠিকভাবে জানা যায়নি।
পরিযায়ী শ্রমিকেরা তো আছেনই, লকডাউনে কাজ হারানো মানুষকে কাজ দিতেও উদ্যোগী হয় প্রশাসন। উদ্দেশ্য, কাজের বিনিময়ে নগদ টাকা জবকার্ডধারীদের পৌঁছে দেওয়া। লকডাউনের মধ্যেই যখন কাজ শুরু হল তখন জেলায় জেলায় মোট সাড়ে পাঁচ লক্ষ পরিবারের কাছে জবকার্ড ছিল। প্রশাসনের হিসেবে প্রতি পরিবারে গড়ে দু’জন করে মোট ৯ লক্ষ মানুষ এর আওতায় ছিলেন।
প্রশাসন সূত্রে খবর, নতুন করে জবকার্ডে আবদেন দেওয়ার সুযোগ মিলতেই পরিযায়ী শ্রমিক-সহ প্রচুর সংখ্যায় আবেদন জমা পড়ে। ২২ হাজার নতুন জবকার্ড ইস্যু হয়েছে। ৪৫ হাজার মানুষকে জবকার্ডে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে, যাঁরা এতদিন ১০০ দিনের কাজের আওতায় ছিলেন না। প্রায় চার লক্ষ পরিবারের ৫ লক্ষ ৬০ হাজার মানুষ কাজও পেয়েছেন। শুক্রবার পর্যন্ত কর্মদিবস সৃষ্টি হয়েছে ৮০ লক্ষ। প্রশাসন ধরেই নিচ্ছে, তার মধ্যে পরিযায়ী শ্রমিকরা নিশ্চয়ই আছেন। আধিকারিকদের কথায়, ‘‘তাঁদের অংশগ্রহণ কতটা, পঞ্চায়েতগুলি থেকে তথ্য পেলেই তা বোঝা সম্ভব।’’