ফাইল চিত্র
ভিন্ রাজ্য থেকে আসা পাড়ার এক যুবককে গায়ে চাদর জড়িয়ে ঘুরতে দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। সন্দেহজনক কোনও উপসর্গ না থাকা সত্ত্বেও অভিযোগ, স্থানীয় কিছু মানুষের চাপে পড়ে সেই যুবক রবিবার বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালেও যান। কিন্তু কোনও উপসর্গ না থাকায় সেখানকার ডাক্তার তাঁকে বাড়ি ফিরে যেতে বলায় বেঁকে বসেন বাসিন্দারা। ওই যুবককে হাসপাতালের ‘কোয়রান্টিন’-এই রাখতে বলে বলে তাঁরা দাবি তোলেন বলে অভিযোগ। এলাকাবাসীর এমন আচরণে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন ওই যুবক। শেষে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) প্রিয়ব্রত বক্সী বলেন, “ওই যুবককে হেনস্থা করার খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তিনি যাতে নির্বিঘ্নে বাড়িতে থাকতে পারেন, সে ব্যবস্থা করেছে। তাঁকে যাতে বাড়িতে কেউ বিব্রত না করেন, পুলিশ তা দেখছে। এলাকাবাসীকে ডেকে বোঝানো হয়েছে।’’
ওই যুবকের সঙ্গে কথা বলা যায়নি। তবে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবক তাঁদের কাছে জানিয়েছেন, তিনি মহারাষ্ট্রে থাকেন। সম্প্রতি সেখান থেকে ট্রেনে হায়দরাবাদে যান। তার পরে ফেরার পথে খড়্গপুর হয়ে বিষ্ণুপুর আসেন শনিবার। একাধিক বার বিভিন্ন স্টেশনে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। তবে সে সবের কোনও নথি তাঁর সঙ্গে ছিল না। শনিবার বৃষ্টি হওয়ায় ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব থাকায় তিনি চাদর গায়ে বিকেলে পাড়ায় বেরিয়েছিলেন। তখনই কিছু লোকজন তাঁকে অসুস্থ কি না, তা জানতে চান। তাঁরা তাঁকে হাসপাতালে গিয়ে ‘কোয়রান্টিন’-এ থাকতে জোরাজোরি করেন বলে অভিযোগ। তবে কোনও উপসর্গ না থাকায় হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডাক্তার তাঁকে বাড়িতে থাকতে বলেন। কিন্তু স্থানীয় মানুষ তা মেনে নিতে পারেননি। তাঁদের দাবি, ওই যুবককে হাসপাতালের ‘কোয়রান্টিন’-এ থাকতে হবে।
বিষ্ণুপুর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার তড়িৎকান্তি পাল বলেন, “ভিন্ রাজ্য থেকে এলেই যে করোনা-আক্রান্ত হবেন এমনটা নয়। মানুষের সচেতনতার অভাবে হিতে বিপরীত হচ্ছে। জনসাধারণের অতিসক্রিয়তা পরিষেবার ক্ষেত্রে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। সুস্থ মানুষদের এ ভাবে প্রতিবেশীদের চাপে হাসপাতালের কোয়রান্টিনে রাখতে গেলে যথার্থ অসুস্থদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া মুশকিল হবে।’’