হাসপাতাল থেকে খবর দেওয়া হচ্ছে থানায়। নিজস্ব চিত্র
হাসপাতালের পুরনো এবং অব্যবহৃত সামগ্রী পাচার করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ল হাসতাপালের এক ঠিকাকর্মী-সহ দুই ব্যক্তি। ধৃতদের নাম প্রদীপ গরাই এবং আরিফ মণ্ডলকে। প্রদীপ হাসপাতালের ঠিকাদার সংস্থার সাফাই কর্মীদের সুপারভাইজার ছিল। হাসপাতালের অব্যবহৃত সামগ্রী কিনতে এসেছিল আরিফ। তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, বেশ কয়েক দিন ধরেই হাসপাতালের পুরনো ও অব্যবহৃত সামগ্রী পাচার হওয়ার খবর আসছিল। রবিবার ভোরে সকলের নজর এড়িয়ে হাসপাতালের পিছন দিকের ফটক দিয়ে পড়ে থাকা লোহার অকেজো সামগ্রী বিক্রি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে প্রদীপ। ধরে ফেলা হয় আরিফকেও। চুরির খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে আসেন হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার তড়িতকান্তি পাল। হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা খোকন বাউরি, সন্দীপ কর্মকারের বক্তব্য, “অনেকদিন ধরেই ব্যবহার না করা লোহার সামগ্রী পাচার হয়ে যাচ্ছে বলে শুনছিলাম। এর আগেও অনেকবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলেছি। কিন্তু এত দিন কোনও প্রমাণ ছিল না।’’ তাঁদের সংযোজন, ‘‘রবিবার ভোর ৫টা নাগাদ দেখা যায় হাসাপাতালের ভেতর থেকে বার করা হচ্ছে বিভিন্ন পুরনো সামগ্রী। সেগুলি কেনার জন্য এক জন এসেছিল। ক্রেতাকে চেপে ধরলেই আসল সত্য বেরিয়ে আসে।’’ এর পরেই এলাকায় শোরগোল পড়ে। পুলিশ এবং হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপারকে খবর দেওয়া হয়।
এ দিনের ঘটনার পরে খোকন ও সন্দীপবাবুর মতো এলাকার অনেকের দাবি, ‘‘হাসপাতালের পাশে থাকি বলে আমাদের দিকেই অভিযোগের আঙুল উঠত। এই ঘটনায় যুক্ত ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তি চাই।” পুলিশ এবং হাসপাতালের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘প্রদীপ দাবি করে, আগে হাসপাতালের এক জন তাকে অব্যবহৃত সামগ্রী বিক্রির অনুমতি দিয়েছিল। দাবির সমর্থনে তার কাছে কোনও নথি রয়েছে কি না তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনও নথি সে দেখাতে পারেনি।’’
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার বলেন, “কাউকে না জানিয়ে সরকারি জিনিস বিক্রি করা যায় না। ধৃত যে বেসরকারি ঠিকাদার সংস্থার কর্মী, সেই সংস্থার কর্তাকে শো-কজ করা হচ্ছে। ধৃতকে সুপারভাইজারের পদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে বলা হচ্ছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘ধৃতের বিরুদ্ধে বিষ্ণুপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন।” ওই সংস্থার কর্মকর্তা শিবশঙ্কর চৌধুরী ফোন না ধরায় তাঁর প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তাঁর মোবাইলে পাঠানো টেক্সট মেসেজেরও উত্তর আসেনি।
এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) প্রিয়ব্রত বক্সী বলেন, “হাসপাতাল থেকে বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রির চেষ্টার অভিযোগ পেয়েই পুলিশ সেখানে পৌঁছয়। ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেফতার করা হয় প্রদীপ এবং আরিফকে।’’