প্রতীকী ছবি।
করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ে নেমে ওঁদের অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে পরিবারের থেকে দূরে। আবার কেউ সম্পর্কের জটিলতায় আক্রান্ত কিংবা কাজের একঘেয়েমিতে ক্লান্ত। কাজের চাপে, অবকাশের অভাবে মানসিক অবসাদে ভুগছেন পুলিশের একাংশ। অবসাদের গ্রাস থেকে বাহিনীর কর্মীদের বাঁচাতে এ বার মনোবিদদের সাহায্য নিচ্ছে রাজ্য পুলিশ।
ভবানী ভবন সূত্রের খবর, অবসাদ থেকে রাজ্য পুলিশকর্মীদের বাঁচাতে বিশেষ কাউন্সেলিংয়ের পরিকল্পনা করছেন বাহিনীর শীর্ষ কর্তারা। টেনশন আর মানসিক চাপ কমাতে পুলিশের জন্য সিআইডিতে গঠন করা হয়েছে ‘ওয়েলনেস সেন্টার’। সিআইডির তরফে গড়া ছয় সদস্যের একটি দল ওই ওয়েলনেস সেন্টারের কাজকর্ম দেখভাল করছেন। রাজ্য পুলিশের তরফে দু’জন মনোবিদ নিয়োগ করা হয়েছে। ভবানী ভবনে সিআইডির দফতরেই ওই কেন্দ্রে মঙ্গলবার শুরু হয়েছে কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া। সপ্তাহে দু’দিন এক ঘণ্টা করে এই কর্মসূচি চলবে। সিআইডি ছাড়া রাজ্য পুলিশের আরও পাঁচটি শাখার পুলিশকর্মীরা এই কর্মসূচিতে যোগ দিতে পারবেন। অবসাদ কাটাতে মনোবিদের সাহায্য নিতে পারবেন রাজ্য পুলিশের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ, দুর্নীতি দমন শাখা, আর্থিক প্রতারণা দমন শাখার মতো বিভাগের কর্মরত পুলিশকর্মী বা গোয়েন্দারা। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে মানসিক সমস্যা দূর করার চেষ্টা করবেন মনোবিদেরা।
পুলিশকর্মীদের একাংশের বক্তব্য, শুধু সহকর্মীদের পরামর্শ বা কাজের মধ্যে থেকে অবসাদের মতো বিপদ আটকানো যাবে না। মনোবিদদের সামনে উপস্থিত হয়ে, কাউন্সেলিংয়ে যোগ দিয়ে মনের কথা খুলে বললে অবসাদ অনেকটা কমানো যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, সব রাজ্য পুলিশের প্রতিটি কেন্দ্রেই এই প্রক্রিয়া চালু করা হবে।
বছর চোদ্দো আগে সিআইডিতে গোয়েন্দাদের মানসিক অবসাদ দূর করার জন্য কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। এখন মনোবিদদের সামনে পুলিশকর্মীদের বসাতে হচ্ছে কেন?
রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, সম্প্রতি পরপর কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। ডায়মন্ড হারবার থেকে শুরু করে মহাকরণের মতো জায়গায় পুলিশকর্মীরা অবসাদের জেরে আত্মঘাতী হয়েছেন। সঙ্গে মনে রাখতে হবে, করোনা আবহে পরিজনের থেকে দূরে কাজ করতে হচ্ছে কয়েক মাস ধরে। তার জেরে মনের ভিতরে তৈরি হচ্ছে জটিলতা। সেই জট কাটাতেই কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।