রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজ

স্নাতকোত্তরের পঠন-পাঠন শুরু কবে, প্রশ্ন

প্রায় তিন সপ্তাহ আগে রাজ্য সরকার রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা দিয়েছে। কিন্তু শিক্ষা দফতরের তরফে এখনও পর্যন্ত কলেজ কর্তৃপক্ষকে সরাসরি কিছু জানানো হয়নি। এই পরিস্থিতিতে কবে থেকে কলেজে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের পঠন পাঠন শুরু হবে, তা নিয়ে সংশয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৪১
Share:

প্রায় তিন সপ্তাহ আগে রাজ্য সরকার রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা দিয়েছে। কিন্তু শিক্ষা দফতরের তরফে এখনও পর্যন্ত কলেজ কর্তৃপক্ষকে সরাসরি কিছু জানানো হয়নি। এই পরিস্থিতিতে কবে থেকে কলেজে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের পঠন পাঠন শুরু হবে, তা নিয়ে সংশয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

কলেজ সূত্রের খবর, গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজ্য সরকার কলেজটিকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা দিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। সম্প্রতি, রায়গঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত কলকাতার বিকাশ ভবনে গিয়ে সে বিজ্ঞপ্তির প্রতিলিপি জোগাড়ও করে এনেছেন। কিন্তু সরকারি ভাবে এখনও কোনও বিজ্ঞপ্তি হাতে না আসায় কোনও পদক্ষেপ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন কলেজ-কর্তৃপক্ষ।

শিক্ষকদের একাংশের প্রশ্ন উঠেছে, তিন সপ্তাহ পেরোতে চললেও কেন সরকারিভাবে সেই বিজ্ঞপ্তি কলেজ কর্তৃপক্ষকে এখনও পাঠানো হল না?

Advertisement

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তপন মজুমদার বলেন, “শিক্ষা দফতর এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে কিছু জানায়নি। তাই কবে থেকে কলেজে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্তরের পঠনপাঠন শুরু হবে, তা নিয়ে আমরা সকলেই সংশয়ে রয়েছি।”

কলেজের টিচার্স কাউন্সিলের সম্পাদক তাপস মোহান্ত জানান, যতটুকু খবর আছে, শিক্ষা দফতর শীঘ্রই কলেজে নতুন উপাচার্য পাঠিয়ে তাঁর মাধ্যমেই কলেজ কর্তৃপক্ষের হাতে সরকারি নথি তুলে দেবে।

বিধায়ক মোহিতবাবুর অভিযোগ, রাজ্য সরকার রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ক্যাম্পাস করার পরিকল্পনা নিয়েছিল। যদিও পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার দাবিতে জেলা জুড়ে কংগ্রেসের টানা আন্দোলনের চাপেই রাজ্য সরকার কলেজটিকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করতে বাধ্য হয়েছে। তাঁর কথায়, “তিন সপ্তাহ পরেও সরকারি বিজ্ঞপ্তি কলেজে এসে না পৌঁছনোয় রাজ্যের শিক্ষার হাল কতটা বেহাল, তা স্পষ্ট হল। কলেজ কর্তৃপক্ষও বিজ্ঞপ্তি সংগ্রহে উদাসীন।”

জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের পরিষদীয় সচিব অমল আচার্যের দাবি, কোনও সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পর কিছু সরকারি প্রক্রিয়া শেষ করে তা কার্যকরী করতে সাময়িক দেরি হয়। মোহিতবাবুর নাম না করে তাঁর কটাক্ষ, “বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্য সরকারের সাফল্য নিজেদের বলে দাবি করে কংগ্রেস নেতাদের বাসিন্দাদের বিভ্রান্তি করার ঘটনা নতুন কিছু নয়।”

২০১৩ সালের ২৭ নভেম্বর মুখ্যমন্ত্রী রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস চালু করার কথা ঘোষণা করেন। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, কলেজের পরিকাঠামো ভাল থাকায় ও যেহেতু কলেজের পঠনপাঠন-সহ প্রশাসনিক কাজকর্ম উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করে, পরবর্তীতে ওই কলেজকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার দাবিতে বিধায়কের নেতৃত্বে আন্দোলনে নামে কংগ্রেস ও দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্র পরিষদ। একই দাবিতে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হন ইটাহারের তৃণমূল বিধায়ক অমলবাবুও। সেই মতো মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার এক বছরের মাথায় গত বছরের ১১ নভেম্বর বিধানসভায় শাসক ও বিরোধী দলের বিধায়কদের সর্বসম্মতিক্রমে রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার বিল পাশ হয়। এরপরেই সরকারিভাবে বিলটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য রাজ্যপালের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ২১ জানুয়ারি রাজ্যপাল সেই বিলে সই করেন। রাজ্য উচ্চ শিক্ষা দফতরের প্রধান সচিব বিবেক কুমার রাজ্যপালের নির্দেশে ৩ ফেব্রুয়ারি কলেজটিকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement