স্ত্রীকে খুন করে বুধবার দিব্যি আদালতে কাজকর্ম সেরেছিলেন। সহকর্মীরা কেউই তাঁর আচরণে কোনও অস্বাভাবিকতা দেখেননি। শ্বশুরবাড়িতে বলেছিলেন, স্ত্রী ‘আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা’ করেছেন। “আপাতত হাসপাতালে। চিন্তার কিছু নেই।”
শেষ পর্যন্ত নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি অবশ্য। বৃহস্পতিবার সকালে শিলিগুড়ি আদালতের আইনজীবী অরুণাভ রায় থানায় গিয়ে স্বীকার করেন, স্ত্রী সমাপিকা সোনারকে (২৫) গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করেছেন তিনি নিজেই। অরুণাভকে আট দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
পুলিশ কিন্তু তাদের প্রাথমিক রিপোর্টে ঘটনাটি ‘আত্মহত্যা’ বলে উল্লেখ করেছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার আগে পুলিশ এ ব্যাপারে কী করে নিশ্চিত হল? শিলিগুড়ি থানার অফিসাররা স্পষ্ট উত্তর দিতে পারেননি। তবে শিলিগুড়ি কমিশনারেটের ডিসি (সদর) ও জি পাল জানান, বিষয়টা খতিয়ে দেখা হবে। তিনি বলেন, “অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নতুন করে খুনের মামলাও রুজু করা হয়েছে।”
সমাপিকার ভাই সন্দীপের অভিযোগ, “দিদির শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল, জামাকাপড়ও ছেঁড়া ছিল। অরুণাভর বাবা প্রাক্তন পুলিশ কর্তা। সে জন্য পুলিশ ঘটনাটিকে হাল্কা করে দেখাতে চাইছে।” হাসপাতাল সূত্রের খবর, সমাপিকাকে যখন হাসপাতালে আনা হয়, তখনই তাঁর দেহে প্রাণ ছিল না। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়নি কেন? শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের সুপার সঞ্জীব মজুমদার বলেন, “আমার ঠিক জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।”
অরুণাভর সহকর্মীরা জানান, বুধবার সকালে ওই আইনজীবী আদালতে যান। দুপুরে বাড়িও ফেরেন। তখনই দাদা অসীম রায়কে ফোন করেন অরুণাভ। মাদারিহাটে শ্বশুরবাড়িতেও খবরটা দেন। অসীমবাবু বলেন, “ভাই ফোন করে বলে, সমাপিকা গলায় দড়ি দিয়ে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছিল। দরজা ভেঙে অরুণাভই তাকে উদ্ধার করেছে।” সন্ধেয় সমাপিকার বাড়ির লোকজন আসেন। মৃতার মা ইতিকাদেবী বলেন, “আমরা আসার পরে আমাদের সঙ্গে এক বারও দেখা করেনি অরুণাভ। তখনই সন্দেহ হয়েছিল।”