ভাইয়ের হাত কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠল দাদা’র বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ ইসলামপুর থানার সুজালি গ্রামপঞ্চায়েতের ধুলিগাঁও মোড় এলাকাতে ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনায় রাজনৈতিক রং লাগলেও পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, জমি নিয়ে দুই ভাইয়ের বিবাদের জেরেই ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনাচক্রে অভিযুক্ত কংগ্রেস কর্মী হলেও আহত ভাই তৃণমূল সমর্থক। তৃণমূলের হলে প্রচার করায় কংগ্রেসি দাদা ভাইয়ের উপর হামলা চালিয়েছে বলে তৃণমূলের অভিযোগ। পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্ত এবং জখম দুই জনের নামেই একাধিক অসামাজিক কাজকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশ জানায়, এদিন সকালে মহম্মদ আবদুল ও তাঁর ভাই মহম্মদ খালেকের মধ্যে বিবাদ দেখা দেয়। দুই জনের মধ্যে মারপিটও হয়। সেই সময় আবদুল ধারাল অস্ত্র দিয়ে খালেকের ডান হাতে কব্জিতে আঘাত করেন বলে অভিযোগ। হাতের পাঞ্জা খসে পড়ে। ওই অবস্থায় খালককে প্রথমে ইসলামপুর হাসপাতাল পরে সেখান থেকে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে। ইসলামপুরের এসডিপিও সুবিমল পাল বলেন, “এখনও পযন্ত কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। পুরো বিষযটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
শিলিগুড়ির সেবক রোডের একটি নার্সিংহোমে খালেক বর্তমানে চিকিৎসাধীন। সেখানকার চিকিৎসক রঞ্জন পাল চৌধুরী তাঁর চিকিৎসার দায়িত্বে রয়েছেন। আজ, শনিবার তাঁর হাতে অস্ত্রোপচার করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আপাতত ওই ব্যক্তিকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে অস্ত্রোপচার করা হবে। আপাতত তিনি বিপন্মুক্ত।”
অভিযুক্ত আবদুল জানিয়েছেন, পরিবারের একটি জমি নিয়েই ওই গন্ডগোলের সূত্রপাত। এদিন ওই জমি তাঁর বলে দাবি করলে ছোট ভাই খালেক ও অপর এক ভাই আবুল। দুই জনে আমার উপর চড়াও হয়। আমাকে লক্ষ্য করে গুলিও চালায়। প্রাণে বেঁচে গিয়েছি। আমি ওঁর হাত কাটিনি। দুই জন মিলে ধারাল অস্ত্র নিয়ে আমার উপর চড়াও হয়েছিল। নিজেদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কিতে ভাইয়ের হাত কেটেছে। এখন আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।
তবে পরিবারের আরেক সদস্য, অভিযুক্তের আরেক ভাই আবুলের দাবি, এ দিন চোপড়ায় মমতা বন্দোপাধ্যায় এর জনসভা উপলক্ষ্যে এলাকাতে একটি হাট মিছিল হয়। জনসভায় যাওয়ার জন্য খালেক সবাইকে ডাকতে গেলে দাদা ভাইকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। ভাই-এর কব্জির উপর থেকে হাতের অংশ কেটে নেয়। রাজনৈতিক কারণে খালেকের হাত কেটে নেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূল দাবি করলেও কংগ্রেসের দাবি, জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে ওই ঘটনা ঘটেছে।
ইসলামপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী আবদুল করিম চৌধুরী বলেন, “তৃণমূল করায় ভাইয়ে দাদা কুপিয়েছে বলে শুনেছি। অভিযুক্ত কংগ্রেস করেন। এলাকার আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করতে ছাইছে কংগ্রেস। পরিবারের লোকেদের অভিযোগ জানেত বলেছি।” অভিযোগ অস্বীকার করে কংগ্রেসের চোপড়া ব্লক সভাপতি অশোক রায় বলেন, “ঘটনার পিছনে কোনও রাজনীতি নেই। পারিবারিক বিবাদের জেরে ওই ঘটনা ঘটেছে। তৃণমূল নেতাদের চাপে ওই পরিবারের একাংশ রাজনীতির কথা বলছেন।”