লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী ভারতের প্রাক্তন ফুটবল অধিনায়ক ভাইচুং ভুটিয়াকে সমর্থন করা নিয়ে শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের অন্দরে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। ক্রীড়া পরিষদের তৃণমূল সমর্থকরা চাইছে ভাইচুংয়ের হয়ে প্রচার করুক ক্রীড়া পরিষদ। কিন্তু অ-তৃণমূল অন্য আরেকটি দল চাইছে না, ক্রীড়াক্ষেত্রে রাজনীতির রং লাগুক। ফলে সরাসরি প্রচারে নামলে গণ্ডগোল বাধতে পারে আঁচ করতে পেরে অরাজনৈতিক সংগঠনের ছত্রছায়ায়, ভাইচুংয়ের প্রচারে নামার প্রস্তুতির ছক কষছে তৃণমূল। এ কাজে ভাইচুংয়ের হয়ে সমর্থন আদায়ের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন ক্রীড়া পরিষদ সচিব অরূপরতন ঘোষ। তিনি আবার দার্জিলিং জেলা আইএনটিটিইউসি সভাপতিও।
এক্ষেত্রে অরূপবাবুর হাতিয়ার শিলিগুড়ি স্পোর্টস লাভার্স অ্যাসোসিয়েশন। দু’বছর আগে গঠিত এই সংগঠনটি শহরের সাধারণ ক্রীড়াপ্রেমীদের নিয়ে গঠিত হয়েছিল শহরের প্রচলিত ও অপ্রচলিত ক্রীড়ার উন্নতিতে। আপাতত এই সংগঠনটিই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। সংগঠনকে সামনে রেখে প্রচারের পরিকল্পনার কথা স্বীকারও করেছেন সংগঠনের কার্যকরী সমিতির সদস্যরা। যদিও এই সংগঠনেরই একাধিক সদস্য ভোটের রাজনীতির জন্য সংগঠনকে ব্যবহার করার প্রস্তাব মেনে নিতে পারছেন না।
অরূপরতনবাবু বলেন, “মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে ভাইচুং আসছেন। দলীয় বৈঠকের পর জেলা সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। শীঘ্রই আমরা স্পোর্টস লাভার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করব।” সংগঠনের পক্ষ থেকেও ক্রীড়া পরিষদ সচিবের বক্তব্যের সত্যতা স্বীকার করা হয়েছে। সংগঠনের অন্যতম যুগ্ম সম্পাদক বাপি চক্রবর্তী বলেন, “আমরা দু’এক দিনের মধ্যেই বৈঠকে বসব। তাতে প্রচারের রূপরেখা তৈরি করা হবে। ভাইচুংকে জয়ী করতে আমরা ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে আবেদন রাখব।” তৃণমূল প্রার্থী ভাইচুং বলেন, “আমি তো চাই, সকলেই আমাকে সমর্থন করুন।”
প্রকৃতপক্ষে ক্রীড়া পরিষদের একটা বড় অংশের সদস্য কংগ্রেস ও বাম সমর্থক। তাদের দিক থেকে আপত্তি ওঠাতেই অন্য অরাজনৈতিক সংগঠনকে বেছেছেন তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। যদিও ক্রীড়াপ্রেমী সংগঠনের ব্যানারে, ভোটের প্রচারের ব্যপারেও আপত্তি রয়েছে সদস্যদেরই। সংগঠনের বৈঠকে এ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন একাধিক ক্রীড়াপ্রেমী। শিলিগুড়ির এক ফুটবল কোচ জয়ব্রত ঘোষ বলেন, “ক্রীড়াপ্রেমী সংগঠনের আড়ালে কোনও রাজনৈতিক প্রচার আমরা বরদাস্ত করব না।” একই মত রয়েছে আরও অনেকের। নাম না প্রকাশের শর্তে এক প্রভাবশালী বাম কর্মী বলেন, “বৈঠক হলে আমরা তাঁর প্রতিবাদ জানাব। কিছুতেই এই ধরণের অন্যায় আব্দার বরদাস্ত করা যাবে না।”