বিধিভঙ্গের অভিযোগ সব দলের

অষ্টমীর মেলায় প্রচারে বিধিভঙ্গের অভিযোগ উঠল ডান-বাম দু’পক্ষের বিরুদ্ধেই। সোমবার কোচবিহারের তৃণমূলের বিরুদ্ধে আর আলিপুরদুয়ারের আরএসপি-র বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ উঠেছে। কোচবিহারের বিধি ভেঙে টাকা বিলির অভিযোগও উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অষ্টমী স্নান মেলায় ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৪ ০২:২০
Share:

অষ্টমীর মেলায় প্রচারে বিধিভঙ্গের অভিযোগ উঠল ডান-বাম দু’পক্ষের বিরুদ্ধেই। সোমবার কোচবিহারের তৃণমূলের বিরুদ্ধে আর আলিপুরদুয়ারের আরএসপি-র বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ উঠেছে। কোচবিহারের বিধি ভেঙে টাকা বিলির অভিযোগও উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

Advertisement

অষ্টমী স্নান মেলায় ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, বিধি ভেঙে টাকা বিলি করার অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। সোমবার নিজের বিধানসভা এলাকা নাটাবাড়ির চারটি মেলায় যোগ দেন রবীন্দ্রনাথবাবু। তিনি সেখানে একাধিক প্রতিশ্রুতি দেন বলে অভিযোগ। একটি জায়গায় মেলা কমিটিকে তিনি হাজার টাকা দেন। একটি মেলার মাঠে তৃণমূূল ক্যাম্প অফিস তৈরি করে ভোটারদের মধ্যে চা বিলি করেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা বামফ্রন্ট, কংগ্রেস ও বিজেপি। জেলাশাসক মোহন গাধী বলেন, “বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। বিধিভঙ্গ করা হলে আইন মেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ভোট প্রচার নিষিদ্ধ করেছে নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যে জেলায় বৈঠক ডেকে সমস্ত বিধিনিষেধের কথা রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছে কমিশন। এদিন অষ্টমী স্নানের মেলা উপলক্ষে জেলার নানা জায়গায় মেলা আয়োজন করা হয়। নাটাবাড়ির চারটি মেলায় অংশ নেন রবীন্দ্রনাথবাবু। প্রথমে তিনি যান শহরের কাছে কালীঘাটে। এর পর জেলা সভাপতি পানিশালার বাবা গদাধর দাম, পানিশালা ছাটবড়চৌকি এবং চিলাখানায় দরিয়াবলাই বলরাম মন্দিরের মেলায় অংশ নেন। ভোটে জিতলে ছাটবড়চৌকিতে মেলার ঘাট পাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন বলে নালিশ। মেলা কমিটিকে হাজার টাকা তিনি দেন বলে অভিযোগ। সেই কথা মাইকে ঘোষণা করে মেলা কমিটির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

রবীন্দনাথবাবু অবশ্য বলেন, “আমি বিধিভঙ্গ করিনি। এটা বার্ষিক তিথি। এলাকার সমস্ত মানুষ জানে আমি প্রতি বছর মেলায় আসি। এ বারও এসেছি। মেলা কমিটিকে এক হাজার টাকা চাঁদা দিয়েছি। এখানে বিধিভঙ্গের অভিযোগ কি আছে? এ ছাড়া সারা বছর সাধারণ মানুষের সঙ্গে থাকি। এই জন্য মেলায় ক্যাম্প করে কারও যাতে কোনও অসুবিধে না হয় সেদিকে লক্ষ রেখেছেন কর্মীর।”

এ দিন সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অনন্ত রায় বলেন, “আমরা খবর পেয়েছি, বিধিভেঙে বিভিন্ন স্নানের মেলায় ভোট প্রচার করেছে তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি ভোটারদের প্রতিশ্রতি দিয়ে ভোট আদায়ের চেষ্টা করছে। টাকাও বিলি হয়েছে। আমরা নির্বাচন কমিশনে জানাচ্ছি।” বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক নিখিলরঞ্জন দে বলেছেন, “স্নানের মেলায় ক্যাম্প অফিস করে বিধি ভাঙে তৃণমূল। কমিশনে নালিশ জানিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করা হচ্ছে।” কংগ্রেসের কোচবিহার লোকসভা আসনের প্রার্থী কেশব রায় বলেন, “ধর্মীয় অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক প্রচার ঠিক নয়। আমরা খোঁজখবর করছি। কমিশনের দ্বারস্থ হব।”

বিধিভঙ্গের অভিযোগ উঠল আরএসপি প্রার্থী মনোহর তিরকের বিরুদ্ধেও। এদিন বেলা ১২টা নাগাদ ঢুকে পড়েন কালজানি নদীর ধারে অষ্টমী স্নানের মেলায়। সেখানে তিনি প্রচার করে বলে অভিযোগ। তাতেই তাঁর বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গের অভিযোগ উঠছে। আলিপুরদুয়ারের মহকুমাশাসক তথা সহকারী রির্টানিং অফিসার নিখিল নির্মল বলেন, “ধর্মীয় মেলায় নির্বাচনী প্রচারে মানা রয়েছে। এদিন আরএসপি প্রার্থী কালজানি নদীর তীরে অষ্টমী স্নানের মেলায় গিয়েছিলেন বলে কংগ্রেসের তরফে ফোনে অভিযোগ পেয়েছি। মনোহরবাবুকে শোকজ নোটিশ পাঠানো হচ্ছে।” মনোহর তিরকে অবশ্য বলেন, “আলিপুরদুয়ার শহরে রাস্তার ধার দিয়ে প্রচার করছিলাম। পাশেই ওই মেলা চলছিল। লোকজন ডাকায় তাতে ঢুকে পরেছি। এতে বিধিভঙ্গ হবে জানতাম না।” আলিপুরদুয়ার পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তথা আরএসপি নেতা গৌতম তালুকদার জানান, প্রার্থী মেলায় প্রচার করেননি। জিলেপি খেতে গিয়েছিলেন। প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারাণ সম্পাদক বিশ্বরঞ্জন সরকার বলেন, “দলীয় পতাকা নিয়ে মেলায় প্রচার হয়েছে। বিষয়টি সহকারী রির্টানিং অফিসারকে জানানো হয়েছে।” আর তৃণমূল কংগ্রেসের জলপাইগুড়ি জেলার পর্যবেক্ষক সৌরভ চক্রবর্তী জানান, মনোহরবাবু কর্মী সমর্থক নিয়ে মেলায় ঘুরে রীতিমত প্রচার করেছেন। আমরাও অভিযোগ করছি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement