এগারো মাস ধরে মাইনে না পেয়ে ক্ষুব্ধ ভোকেশনাল শিক্ষকরা স্কুলের অফিসঘরে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান করলেন। সোমবার ঘটনাটি ঘটে ময়নাগুড়ির চূড়াভাণ্ডার গ্রাম পঞ্চায়েতের ভুজারিপাড়া মোহরচাঁদ হাই স্কুলে। বিকেল চারটে নাগাদ অবস্থান তুললেও আন্দোলনকারীরা জানান, বেতনের আশ্বাস না মেলা পর্যন্ত তাঁরা অবস্থান করবেন। আজ, মঙ্গলবারও তাঁরা আন্দোলন চালাবেন বলেও জানান তাঁরা।
এ দিনের বিক্ষোভের খবর পৌঁছেছে জলপাইগুড়ি জেলাশাসক পৃথা সরকারের কাছেও। তিনি বলেন, “ব্লক থেকে স্কুলের বিষয়ে সরকারি রিপোর্ট পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ময়নাগুড়ির যুগ্ম বিডিও সমরেশ রায় বলেন, “স্কুল কর্তৃপক্ষ এখনও কিছু জানায়নি। সমস্যার কথা জানালে জেলা প্রশাসনকে জানিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।” জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা দফতরের আধিকারিক স্বপন সামন্ত বলেন, “ওই শিক্ষকদের বেতন রাজ্য ভোকেশনাল কাউন্সিল থেকে হয়। এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।”
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ১৫ জন ভোকেশনাল শিক্ষক স্কুলে আছেন। তাঁদের মাথা পিছু প্রায় ৬ হাজার টাকা বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও, কিন্তু এগারো মাস ধরে বেতন মিলছে না। ওই শিক্ষকদের দু’জন পুলক রায় ও রাখি সরকার অভিযোগ করেন, “বেতনের সমস্যার কথা সংশ্লিষ্ট দফতরে বারবার জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি। তাই আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।”
এ দিন সকালে স্কুলে পৌঁছে ভোকেশনাল শিক্ষকরা ক্লাসঘর খোলা রেখে অফিসে তালা ঝুলিয়ে বেঞ্চ পেতে অবস্থান আন্দোলন শুরু করেন। শিক্ষকরা অফিসে ঢুকতে বাধা পেয়ে সোজা ক্লাসে যান। খাতা না থাকায় এ দিন তাঁরা ছাত্রদের হাজিরাও নিতে পারেননি। একই ভাবে হাজিরা খাতায় সই করা সম্ভব হয়নি ভোকেশনাল শিক্ষকদের। বেতন সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিকাশ তালুকদার। তিনি বলেন, “বকেয়া বেতনের জন্য স্কুলের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট দফতরে যোগাযোগ চলছে।” যদিও তৃণমূল প্রভাবিত স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতি অমৃতকুমার রায় ওই জটিলতার জন্য বিগত বামফ্রন্ট প্রভাবিত পরিচালন কমিটির গাফিলতিকে দুষেছেন। তাঁর অভিযোগ, স্কুলে ৯ জন ভোকেশনাল শিক্ষক আগে থেকে ছিল। ২০১১ সালের ২১ জুলাই ফের ৬ জনকে নিয়োগ করা হয়। অথচ রাজ্য ভোকেশনাল কাউন্সিল থেকে স্কুলে নোটিশ পাঠিয়ে জানানো হয় ১৯ জুলাইর পরে ওই বিভাগে কোন নিয়োগ চলবে না। তিনি বলেন, “জটিলতা কাটানোর চেষ্টা চলছে। আমরা শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”