চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠল বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সহ-সভাপতি ও তাঁর স্ত্রী দলের মহিলা মোর্চার জেলা সভানেত্রীর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাতে ওই দু’জনের বিরুদ্ধে ধূপগুড়ি থানায় প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন রূপানন্দ রায় নামে পূর্ব আলতাগ্রামের এক বিজেপি কর্মীর ছেলে। শহরের মিলপাড়া এলাকার বাসিন্দা অভিযুক্ত জেলা বিজেপি সহ-সভাপতি মনোরঞ্জন বর্মা ও বিজেপি মহিলা মোর্চার জেলা সভানেত্রী জ্যোত্স্না বর্মার বিরুদ্ধে ৪২০ এবং ৩৮৪ ধারায় মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। অভিযোগকারী যুবক রূপানন্দের অভিযোগ, “রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে আমাকে চাকরির ব্যবস্থা করে দেবেন বলে গত মার্চে মনোরঞ্জনবাবু ও তাঁর স্ত্রী বাবার কাছ থেকে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা নেন। চাকরি হয়নি। পরে একটি বেসরকারি ডাটা এন্ট্রি সংস্থায় চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। সেটাও হয়নি।”
দলের নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে দলেরই এক কর্মীর ছেলের দায়ের করা অভিযোগকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে দলের ভিতরেই। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে। দলের জেলা সভাপতি দীপেন প্রামাণিক বলেন, “অভিযোগ শুনেছি। দলীয় স্তরে ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।” এ দিকে ধূপগুড়ি থানার আইসি যুগলচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
একইভাবে আরও কিছু বেকার যুবকের কাছ থেকে ওই দু’জন টাকা তুলেছেন বলেও অভিযোগ। রূপানন্দের বাবা গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে পূর্ব আলতাগ্রামের বিজেপি প্রার্থী জগদীশ রায় বলেন, “টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে হলে ওঁরা ছেলে ও আমাকে বাড়িতে ডেকে জোর করে টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে।” অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন জেলা বিজেপি সহ-সভাপতি মনোরঞ্জন বর্মা ও বিজেপি মহিলা মোর্চার জেলা সভানেত্রী জ্যোত্স্না বর্মা। মনোরঞ্জনবাবু বলেন, “আমাদের বদনাম করতে এসব ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করলে পুরো বিষয়টি স্পষ্ট হবে।”
জগদীশবাবুর বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতারণার অভিযোগ করেছেন জ্যোত্স্না দেবী। তাঁর দাবি, “ব্যাঙ্কের চাকরি নিয়ে কোনও কথা হয়নি। একটি বেসরকারি ডাটা এন্ট্রি সংস্থায় চাকরির সুযোগ পান। খবর পেয়ে অনেককে তিনি জানান। সেখানে নিজের ছেলের কাজের ব্যবস্থা করেন। সংস্থায় নিয়োগপত্রের জন্য ১০ হাজার ২০০ টাকা এবং অফিসের আসবাবপত্র বাবদ ৪ হাজার ৮০০ টাকা দেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল। ছেলের কাজের জন্য তাঁকেও টাকা দিতে হয়েছে।” তিনি বলেন, “জগদীশবাবু কয়েক জনের থেকে ৫৪ হাজার টাকা এনে আমাদের হাতে দেন। আমরা ওই টাকা কোম্পানিতে জমা দিই। কয়েকদিনের মধ্যে কোম্পানি উঠে যায়। গত ৬ ডিসেম্বর ধারে ৫৪ হাজার টাকা জোগাড় করে ফেরত দিয়েছি। এখন উনি বলছেন, আরও টাকা পাওনা রয়েছে মনে হচ্ছে।” তাঁর পাল্টা অভিযোগ, জগদীশবাবু বাইরে থেকে বেশি টাকা তুলে আত্মসাত্ করে আমাদের উপরে দায় চাপানো চেষ্টা করছেন।