সিপিএম, আরএসপির পরে এ বার ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে পঞ্চায়েত সদস্যরা বিজেপিতে যোগ দিলেন। জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের মেখলিগঞ্জ মহকুমা এলাকার দশ সদস্যের ভোটবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ফরওয়ার্ড ব্লক প্রধান সহ ছয় জন দলবদল করেছেন। বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা পার্টি অফিসে ওই দলবদল অনুষ্ঠানে দলের জেলা সভাপতি দীপেন প্রামাণিক, লোকসভা আসনে প্রার্থী হওয়া সত্যলাল সরকার উপস্থিত ছিলেন। দল বদলে ভোটবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত ফ্রন্টের হাতছাড়া হল।
যদিও এ দিনের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যদের দল পরিবর্তনের ঘটনা নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানাতে অস্বীকার করেন মেখলিগঞ্জের ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক পরেশ অধিকারী। তিনি বলেন, “ঘটনাটি শুনলাম। কিন্তু ওই বিষয়ে খোঁজ না নিয়ে কিছু বলতে পারব না।” এ দিন দলত্যাগের পরে ভোটবাড়ি পঞ্চায়েত প্রধান ফরওয়ার্ড ব্লকের সোনালি রায় প্রধান বলেন, “লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে তৃণমূলের লোকজন হুমকি দিচ্ছে। বামফ্রন্টের নেতারা নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। নিরুপায় হয়ে বিজেপিতে যোগ দিলাম।” একই দাবি করেছেন ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম উপপ্রধান আলিমা বেগম, সদস্য ফরওয়ার্ড ব্লকের মঞ্জুমা বেগম, মিনতি রায়, মাধব রায় ও গবিরাম রায়েরা। বিজেপির জেলা সভাপতি বলেন, “নানা দল থেকে ওই এলাকার কয়েকশো সদস্য বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন।”
এ দিকে, শনিবার জলপাইগুড়ি রোড স্টেশন সিটু নিয়ন্ত্রিত রেলওয়ে হকারস ইউনিয়নের স্থানীয় ইউনিট কমিটির সম্পাদক ও সভাপতি অন্তত দেড়শো কর্মী সমর্থককে নিয়ে বিজেপি প্রভাবিত ভারতীয় মজদুর মোর্চায় যোগ দেন। এর আগে শুক্রবার ময়নাগুড়িতে সভা করে অনুগামী দশজন পঞ্চায়েত সদস্যকে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন ময়নাগুড়ি বিধানসভা উপনির্বাচনের আরএসপি-র পরাজিত প্রার্থী দীনবন্ধু রায়। বিজেপির তরফে জানানো হয়, জলপাইগুড়ি পুরসভা এলাকার ১৩ নম্বর ওয়ার্ড, সদর ব্লকের কোনপাকড়ি, মণ্ডলঘাট, রাজগঞ্জ ব্লকের টাকিমারির নানা দলের কয়েকশো সমর্থক রবিবার বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।
আরএসপির ময়নাগুড়ি জোনাল কমিটি সম্পাদক অতুল রায় বলেন, “এই মুহূর্তে কিছু বলা সম্ভব নয়। কেউ যদি দল ছেড়ে চলে যেতে চায়, তাঁকে কি আটকে রাখা সম্ভব?” লোকসভা ভোটের ফলের ভিত্তিতে ময়নাগুড়িতে ফ্রন্ট যে দুর্বল সেটা স্পষ্ট। আরএসপি জোনাল কমিটির এক নেতা জানান, “২০১১ সালে ময়নাগুড়ি বিধানসভা নির্বাচনে আরএসপি ৮৪৮৮৭ ভোট পায়। তৃণমূল ও বিজেপি পায় ৬৮৬১১ এবং ৬৩০৯ ভোট। আর এই বারের উপ নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে ৯৮ হাজার ৯৯০ এবং আরএসপি ৬৭ হাজার ১৫১ ভোট। বিজেপি-র প্রার্থী ছিল না।” ওই নেতার দাবি, ভোটের পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট বামফ্রন্টের সংগঠন কতটা দুর্বল হয়েছে।