সাঁকো পারাপারের টাকা নিয়ে তৃণমূল ও সিপিএম সমর্থকদের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল ইসলামপুর। মঙ্গলবার রাতে ইসলামপুর থানার ডাঙাপাড়ায় ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন বাঁশের সাকো পারাপারের সময় সিপিএম ও তৃণমূলের সমর্থকদের মধ্যে বিবাদ বাধে। পরে তা সংঘর্ষের আকার নেয়। দু’পক্ষই লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। সংঘর্ষে দু’পক্ষের অন্তত ছয় জন আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে। ঘটনার খবর পেয়ে ইসলামপুর থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ইসলামপুরের এসডিপিও সুবিমল পাল বলেন, ‘‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকাতে পুলিশ পিকেট রয়েছে। তবে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।”
তৃণমূলের অভিযোগ, ইসলামপুর থানার ডাঙাপাড়া এলাকাতে দলেঞ্চা নদীর উপর থাকা বাঁশের সাকোটি এলাকার তৃণমূল সমর্থক আবদুল বারি লিজে পেয়েছিলেন। এ দিন রাতে সেই সাঁকো পারাপারের টাকা নিয়ে স্থানীয় এক সিপিএম সমর্থক মহম্মদ ইসলাম এর সঙ্গে বচসা বাধে আবদুল বারির। এর পরই সংঘর্ষ শুরু হয়। তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুর জেলা কমিটির সদস্য জাভেদ আখতার বলেন, “সিপিএম সমর্থকরাই প্রথমে হামলা চালায়। বাড়ি ঘরও পুড়িয়ে দিয়েছে সিপিএম এর সদস্যরা। বিষয়টি পুলিশকে বলেছি।”
সিপিএমের অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে তাদের উপরেই তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থকেরা হামলা চালিয়েছে। সিপিএম সমর্থক মহম্মদ ইসলাম বলেন, “সাকো পারাপারের বরাত পেতে আবেদন করেছিলাম। সে কারণেই বেশি টাকায় বরাত নিতে হয়েছে বলে অভিযোগ করে তৃণমূল কংগ্রেস হামলা চালায়।” সিপিএমএর ইসলামপুর জোনাল কমিটির সদস্য বিকাশ দাস বলেন, “তৃণমূল নিজেদের জোর দেখানোর চেষ্টা করছে। এ দিন রাতে বাড়ি ফেরার সময় ওদের দলবল আমাদের বেশ কিছু সমর্থকের উপর হামলা চালায়।” সংঘর্ষের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার জনকে আটক করেছে পুলিশ।
ইসলামপুরের দলেঞ্চা নদীর উপর সাকোটি গত বছর ২৫ হাজার টাকায় বরাত পেলেও এ বার ওই সাকোটির লিজ নিতে প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষাধিক টাকা জমা রাখতে হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ইসলামপুর বিডিও স্মিতা সুব্বা বলেন, “ওই সাঁকোটির জন্য সরকারি ভাবে ৬০ হাজার টাকা ধার্য হয়েছিল। আবেদনকারীরা সাঁকোটির দাম বাড়িয়ে সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা করে। তবে সেই যিনি বরাত পেয়েছিলেন তিনি নির্ধারিত সময়ে সেই টাকা জমা করতে পারেননি। ভোট প্রক্রিয়া শেষ হলে সাকোটি নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।”