কলেজ পড়ুয়া এক যুবকের ক্ষতবিক্ষত রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াল।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রায়গঞ্জ থানার রামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সাহাপুর নলপুকুর এলাকার ৩৪ জাতীয় নম্বর জাতীয় সড়কের ধারের একটি মাঠ থেকে ওই যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম নিজামুদ্দিন আলি (২১)। তাঁর বাড়ি ওই গ্রাম পঞ্চায়েতেরই গোমর্ধা এলাকায়। এদিন বাড়ি থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে ওই মাঠে রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র নিজামুদ্দিনের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন বাসিন্দারা। মৃতের ডান চোখ ও পেটে ধারাল অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের দাবি, একাধিক দুষ্কৃতী মিলে ওই যুবককে কুপিয়ে খুন করে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে নিহতের সাইকেল ও একটি মোবাইল পুলিশ উদ্ধার করতে পেরেছে। আরেকটি মোবাইলের কোনও হদিস পাওয়া যায়নি। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা বলেন, “কী কারণে ওই যুবককে দুষ্কৃতীরা খুন করল, সেই বিষয়ে এখনও স্পষ্ট করে কিছু জানা যায়নি। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।” প্রাথমিক তদন্তের পর অবশ্য পুলিশের অনুমাণ, প্রেমঘটিত কোনও কারণ বা পুরনো কোনও শত্রুতার জেরে দুষ্কৃতীরা নিজামুদ্দিনকে খুন করে থাকতে পারে।
পুলিশ জানিয়েছে, নিজামুদ্দিনের বাবা সাতানু মহম্মদ পেশায় চাষি। এ ছাড়াও তাঁর বাড়ির সামনে একটি মুদিখানা দোকানও রয়েছে। বাবা চাষের কাজে ব্যস্ত থাকলে সেই দোকান নিজামুদ্দিন চালাতেন। পাঁচ দাদা, এক ভাই ও এক বোন রয়েছে। কিছুদিন ধরে নিজামুদ্দিনের একটি মোবাইলে বিভ্রাট শুরু হয়েছিল। বুধবার সন্ধ্যায় তিনি মোবাইল মেরামত করাতে যাচ্ছেন বলে পরিবারের লোকজনদের জানিয়ে সাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বার হয়ে নিখোঁজ হয়ে যান। রাতভর খোঁজাখুজি করেও পরিবারের লোকজন নিজামুদ্দিনের কোনও খোঁজ পাননি। নিহতের দাদা জিয়ারুল রহমানের দাবি, “নিজামুদ্দিনের সঙ্গে কারও কোনও গোলমাল ছিল বলে জানা নেই।”
পুলিশের দাবি, মৃতদেহের পাশ থেকে যে মোবাইলটি উদ্ধার হয়েছে, সেটিই মেরামতি করতে নিজামুদ্দিন ওইদিন বাড়ি থেকে বার হয়েছিল। পুলিশ নিহতের মোবাইলের কললিস্ট খতিয়ে দেখে তিনি শেষবার কার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন, তা জানার চেষ্টা শুরু করেছে। নিহতের প্রতিবেশী মহম্মদ জাভেদ আলির দাবি, “নিজামুদ্দিন এলাকায় খুব ভাল ও শান্ত প্রকৃতির ছেলে বলে পরিচিত ছিল। এরকম একজন ছেলেকে দুষ্কৃতীদের হাতে কেনও খুন হতে হবে সেটাই বুঝতে পারছি না।”