আরশাদের বাড়ি সিল করল পুলিশ

অপহৃতা তরুণী উদ্ধার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারাবাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে তরুণীকে অপহরণের ঘটনায় অভিযুক্ত আরশাদকে পাল্টা চাপে ফেলতে তার বাড়ি সিল করে দেওয়া দিল পুলিশ। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও ফ্রিজ করার জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছে পুলিশ। পুলিশের সন্দেহ, মালদহ বা দুই দিনাজপুরের কোথাও গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে অভিযুক্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চাঁচল শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৬ ০২:১৬
Share:

পলাতক আরশাদ। —নিজস্ব চিত্র।

বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে তরুণীকে অপহরণের ঘটনায় অভিযুক্ত আরশাদকে পাল্টা চাপে ফেলতে তার বাড়ি সিল করে দেওয়া দিল পুলিশ। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও ফ্রিজ করার জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছে পুলিশ।

Advertisement

পুলিশের সন্দেহ, মালদহ বা দুই দিনাজপুরের কোথাও গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে অভিযুক্ত। ইতিমধ্যে আরশাদের মা ও প্রথম স্ত্রীকে জেরা করছে পুলিশ। সোমবার অভিযুক্তের বাড়ি সিল করে দেওয়া হয়।

মালদহের চাঁচলের ডারকিনারায় বাড়িতে চড়াও হয়ে বোমাবাজি করে শনিবার ভোররাতে দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে আরশাদ ও তার সঙ্গীরা অপহরণ করে বলে অভিযোগ। অপহৃতা ছাত্রীকে এখনও উদ্ধার করা যায়নি। অপহরণের ঘটনার তিনদিন বাদেও অভিযুক্ত যুবক বা তার সঙ্গীদের কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় ছাত্রীর পরিজনদের পাশাপাশি ক্ষোভ বাড়ছে এলাকার বাসিন্দাদের। অপহৃতা কী অবস্থায় রয়েছে তা নিয়ে আতঙ্কিত তার পরিবারের সদস্যরা।

Advertisement

চাপ বাড়তে থাকায় আরশাদকে ধরতে মরিয়া পুলিশ তরুণীর বাবাকে সঙ্গে নিয়েই টানা তল্লাশি চালাচ্ছে। আরশাদ ধরা না পড়লেও তদন্ত সঠিক পথেই এগোচ্ছে বলে দাবি পুলিশের। তাই সে যাতে পালাতে না পারে সেজন্য মালদহ ছাড়াও দুই দিনাজপুর পুলিশকেও আরশাদের ছবি পাঠানো হয়েছে। জানানো হয়েছে কলকাতার বিধাননগর কমিশনারেটেও। রেলপথে যাতে আরশাদ পালাতে না পারে সেজন্য অভিযুক্তের ছবি দেওয়া হয়েছে রেল পুলিশকেও।

চাঁচলের এসডিপিও রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘একাধিক জায়গায় হানা দেওয়া হলেও আরসাদের সন্ধান মেলেনি। তবে বেশ কয়েকটি সূত্র মিলেছে।’’ তবে কি সেই সূত্র তা নিয়ে অবশ্য মুখ খুলতে চায়নি পুলিশ।

তিনবার বিয়ের পরেও নিজেকে ডাক্তারির ছাত্র বলে ভুয়ো পরিচয় দিয়ে ডারকিনারার ওই তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে আরশাদ। কিন্তু বিয়ের উদ্যোগ নিতেই আরশাদের কীর্তির কথা জানতে পারেন তরুণীর পরিজনরা। তারপর ২০ ডিসেম্বর বিয়ের আশ্বাসে সহবাসের অভিযোগ জানান তরুণী। কিন্তু তারপরেও আরশাদ ধরা পড়েনি। এরপর শনিবার বোমাবাজি করে অপহরণের ঘটনাটি ঘটে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকমাস আগে কলকাতায় বিধাননগর এলাকায় একটি বেসরকারি সংস্থায় তরুণীকে নার্সিং প্রশিক্ষণের জন্য নিয়ে যায় আরশাদ। তখন তরুণীকে সে বিয়ে করেছিল বলে তার ঘনিষ্ঠদের দাবি। এমনকি অপহৃতা তরুণী স্বেচ্ছায় তার সঙ্গে গিয়েছে বলেও আরশাদ তার ঘনিষ্ঠদের কাছে যে দাবি করেছে তাও পুলিশের কানে পৌঁছেছে। যদিও তরুণীর পরিজনরা তা মানতে চাননি। তাঁদের যুক্তি, তরুণী স্বেচ্ছায় যেতে চাইলে আরশাদ ঝুঁকি নিয়ে বাড়িতে চড়াও হয়ে তাকে তুলে নিয়ে যেত না। প্রতারণা করে বা যেভাবেই হোক আরশাদ তাকে বিয়ে করেছিল বলে যে দাবি করেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

যদিও এদিন তরুণীর বাবা জানান, দু’রাত ধরে পুলিশ তাঁকে সঙ্গে নিয়েই টানা তল্লাশি চালিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘অপহরণের কয়েকদিন আগে আরশাদ আমাকে ফোন করে বলেছিল যে আমার মেয়েকে ও বিয়ে করেছে। কিন্তু ও যে মিথ্যা বলছে তা মেয়ের কাছেই জানতে পারি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement