বন্ধ ত্রিহানা বাগান খোলার দাবিতে দাগাপুর শ্রমিক ভবনে জয়েন্ট লেবার কমিশনারকে স্মারকলিপি প্রদান শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের: ছবিঃ বিনোদ দাস।
বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি তরাইয়ের বন্ধ ত্রিহানা চা বাগানে অ্যাম্বুল্যান্সের অভাবে অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক বিমল ওরাওঁয়ের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল। শুক্রবার বাগান খোলার দাবিতে সরব হয়েছেন শ্রমিকরা। শ্রম দফতরের শিলিগুড়ির অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান শ্রমিকদের একাংশ। বিমলের মতো আর কাউকে যাতে চিকিৎসার অভাবে মরতে না হয়, সে দাবি তোলেন তাঁরা। বাগান খোলার এবং বকেয়া মেটানোর দাবিও তুলেছেন। আজ, শনিবার ত্রিহানার কারখানার সামনে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন শ্রমিকেরা।
মৃত বিমলের ছেলে জিতিনের বক্তব্য, ‘‘বিনা চিকিৎসায় বাবার মৃত্যু হল! হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার অ্যাম্বুল্যান্স পর্যন্ত মিলল না। তার পরেও প্রশাসন কিংবা বাগান কর্তৃপক্ষ শ্রমিকেরা কেমন রয়েছেন, তার খোঁজ পর্যন্ত নেয়নি।’’ বিডিও (নকশালবাড়ি) প্রণব চট্টোপাধ্যায় অবশ্য দাবি করেন, "এলাকায় স্বাস্থ্য শিবির করা হচ্ছে। পানীয় জল থেকে পথবাতির মতো বিষয়গুলিতেও নজর রাখতে বলা হয়েছে।"
এ দিন শ্রম দফতরে শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে মালিক পক্ষের বৈঠক ছিল। তবে মালিক পক্ষ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। বাগান মালিক ঘনশ্যাম কঙ্কানির দাবি, ‘‘আমরাও চাই, বাগান খুলুক। তৃণমূলের শ্রমিক নেতারা বাগান দখল করে রেখেছেন।" বৈঠকে পিএফ দফতরের শিলিগুড়ির এক আধিকারিক ছিলেন। শ্রম দফতর সূত্রের দাবি, ত্রিহানায় এখনও পিএফের প্রায় তিন কোটি টাকা জমা করা হয়নি। মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার দাবি তুলেছেন শ্রমিক নেতারা। শিলিগুড়ির অতিরিক্ত শ্রম কমিশনার পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শ্রমিক সংগঠনগুলি অবিলম্বে বাগান খুলে বকেয়া মেটানোর দাবি জানিয়েছে। পিএফ জমা না দেওয়ার প্রতিবাদে আইনি পদক্ষেপের দাবি তুলেছে সংগঠনগুলি। পরের বৈঠকে মালিক পক্ষকে ডাকা হবে। দফতরের নির্দেশে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ চিকিৎসার অভাবে শ্রমিক মৃত্যুর প্রসঙ্গে কিছু বলতে চাননি তিনি।
তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির দার্জিলিং জেলা সভাপতি নির্জল দে বলেন, ‘‘মালিক পক্ষ বাগান খুলতে রাজি নন। বৈঠকে উপস্থিত না হয়ে, তাঁরা সেটাই প্রমাণ করলেন। কারণ, মালিক পক্ষ চাইছেন, শ্রমিকদের বোনাস, বকেয়া না দিয়ে, ঘুরপথে বাগান খুলতে। সেটা শ্রমিকেরা হতে দেবেন না।" শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ ট্রেড ইউনিয়ন রিলেশন সেলের তরফে এ দিন শ্রম দফতরে স্মারকলিপি দেন। শঙ্করের বক্তব্য, ‘‘শ্রমিক স্বার্থ রক্ষা করে বাগান খোলার দাবি জানিয়েছি।বাগানের বাইরের কোনও নেতা বাগান বন্ধে মদত দিচ্ছে কি না তা সামনে আসা দরকার।’’