বাড়িতে বোমা, অভিযুক্ত তৃণমূল

বারো ঘণ্টার ব্যবধানে ফের বোমা ফাটল আলিপুরদুয়ারে। বুধবার ভোর চারটে নাগাদ শহর লাগোয়া চাপরের পাড় এলাকায় বোমের শব্দ শুনতে পান বাসিন্দারা। বোমা ফেটে একটি বাড়ির দেওয়ালের টিন দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৬ ০২:৪২
Share:

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার

Advertisement

বারো ঘণ্টার ব্যবধানে ফের বোমা ফাটল আলিপুরদুয়ারে। বুধবার ভোর চারটে নাগাদ শহর লাগোয়া চাপরের পাড় এলাকায় বোমের শব্দ শুনতে পান বাসিন্দারা। বোমা ফেটে একটি বাড়ির দেওয়ালের টিন দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে।

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, বোমাটি মাটির নীচে পুঁতে রাখা ছিল। পুলিশের দাবি, সুতলি বোমা ফেটেছে। বিরোধী দলগুলির দাবি, যে দেওয়াল বোমা ফেটে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেটি এক তৃণমূল সমর্থকের বাড়ি। ওই বাড়ির উঠোনেই বোমাটি পুঁতে রাখা ছিল বলে অভিযোগ।

গত মঙ্গলবার বিকেলে আলিপুরদুয়ার শহরের আশুতোষ কলোনিতে বোতল বোমা ফেটে দুই কিশোরী এবং এক বৃদ্ধ জখম হন। তার রেশ কাটতে না কাটতেই এ দিন ভোরে ফের বোমা ফাটায় আলিপুরদুয়ারে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ভোটের দিন শহরে সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করতেই তৃণমূল সমর্থকরা বোমা মজুত করেছিল বলে অভিযোগ বিরোধীদের। পাল্টা অভিযোগ তুলেছে তৃণমূলও। অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ চলতে থাকলেও পরপর বোমার শব্দে আতঙ্ক বাড়ছে আলিপুরদুয়ার শহরে।

চাপরের পাড় এলাকার সিপিএম নেতা আশিসকুমার রায়ের অভিযোগ, ভবেন দাস নামে এক তৃণমূল সমর্থকের বাড়ির উঠোনের পাশে বোমাটি পোঁতা ছিল। ভবেনবাবু অবশ্য দাবি করেছেন, কী ভাবে সেখানে বোমা এল তা তিনি জানেন না। তবে তাঁকে জেরা করার জন্য পুলিশ থানায় নিয়ে গিয়েছে। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার আভারু রবীন্দ্রনাথ বলেন, “বুধবার ভোরে ভবেন দাস নামে এক ব্যক্তির বেড়ার কাছে মাটির ভিতরে বিস্ফোরণ হয়। প্রাথমিক ভাবে সেটি সুতলি দিয়ে তৈরি বোমা বলে মনে হচ্ছে। ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।”

রবিবার ভোটের পরে প্রতিদিনই শহর এবং লাগোয়া এলাকার কোথায় না কোথাও বোমা ফাটার অভিযোগ উঠছে। রবিবারই শহরের তিন নম্বর ওয়ার্ডে এক তৃণমূল কর্মীর বাড়ির বারান্দায় বোমা ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। মঙ্গলবার বিকেলে ১১ নম্বর ওয়ার্ডের আশুতোষ কলোনি এলাকায় বোতল বোমা ফেটে আতঙ্ক ছড়ায়। তারপর এ দিন চাপরের পাড়ে বোমা ফাটল। বাসিন্দাদের একাংশের আশঙ্কা, শহরে আরও বোমা মজুত থাকতে পারে। দাবি উঠেছে, পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে সব বোমা উদ্ধার করুক।

সঙ্গে চলছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও। এ দিন তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী দাবি করেন, বিরোধীরা শহরে বোমা মজুত করেছে। সিআইডিকে দিয়ে তদন্তের দাবিও তুলেছে সৌরভবাবু। তিনি বলেন, ‘‘ভোটের সময় নাশকতার জন্য কেউ বোমা জড়ো করেছিল। ভোট বানচাল করার জন্য বোমা আনা হয়েছিল। সোমবার তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে বোমা ছোড়া হয়। সিইডিকে দিয়ে ঘটনার তদন্ত করা হোক।’’ বিরোধীরা সকলেই অবশ্য তৃণমূলের দিকেই অভিযোগের তির ছুড়েছে। জেলা কংগ্রেস সভাপতি বিশ্বরঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘যে ব্যক্তির বাড়িতে বোমা পুঁতে রাখা হয়েছিল, তা তৃণমূলের এক সমর্থকের বলে জানতে পেরেছি। ভোটের সময় নাশকতার জন্য অস্ত্র ও বোমা মজুত করা হয়েছে বলে বারবার অভিযোগ করেছি। এখন সব সামনে আসছে।’’ আরএসপি নেতা নির্মল দাসের অভিযোগ, ‘‘যার বাড়িতে বোমা ফাটল সেই ব্যক্তি তৃণমূল সমর্থক। কারা কোথায় বোমা মজুত করেছে, বোঝাই যাচ্ছে।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল দুষ্কৃতীদের আশ্রয় দিচ্ছে। প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement