শিলিগুড়ির রাঙ্গাপানি এলাকা থেকে তিন নাবালিকাকে পাচারের চেষ্টার অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করল ফাঁসিদেওয়া থানার পুলিশ। শনিবার সকালে গোপন সূত্রের পাওয়া খবরে ভিত্তিতে পুলিশ এই তিন জনকে গ্রেফতার করে।
পুলিশের দাবি, ধৃতরা তিনজন সম্পর্কে বাবা ও দুই ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে মেয়েদের নিয়ে ভারতে ঢোকা এবং তাঁদের বিক্রি করার চেষ্টা করছিল বলে অভিযোগ। মেয়েরা ধৃতদের পরিবারের বলে শোনা গেলেও তা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। ধৃতদের কাছে পাসপোর্ট ও ভিসা থাকলেও সঙ্গে থাকা শিশুকন্যাগুলির কোনও পাসপোর্ট ছিল না। ধৃতদের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশে সাহায্য করার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। শনিবার ধৃতদের শিলিগুড়ি আদালতে পেশ করা হয়। সরকারি আইনজীবী সুদীপ বাসুনিয়া বলেন, ‘‘ধৃতদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ১১ মার্চ মামলসার কেস ডায়েরি হাজর করতে বলা হয়েছে।’’ অভিযুক্তদের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন তিমির সেনশর্মা। তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ সঠিক নয়। পরিবারের মধ্যে কিছু রাগারাগি, ভুল বোঝাবুঝির ঘটনা রয়েছে। তা থেকেই তা পাচারের ঘটনা বলে মনে হচ্ছে। আদতে তা নয়, তদন্তে তা প্রকাশ হয়ে যাবে।’’ দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, ‘‘তিনজনের বিরুদ্ধে পাচার ও অনুপ্রবেশ আইনেই মামলা করা হয়েছে। আমরা খবর সংগ্রহ করেছি, ধৃতেরা তিন জন নাবালিকাকে নিয়ে এসেছে। তবে তারাই মেয়েদের আত্মীয় কি না তা এখনও প্রমাণ হয়নি। বিস্তারিত জানার জন্য বাংলাদেশের সঙ্গেও যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম রাজ্য কর্মকার, বাবুল কর্মকার ও কালিপদ কর্মকার। এরা বাংলাদেশের বগুড়ার বাসিন্দা। কয়েকদিন আগে বাংলাদেশের কয়েকটি সংবাদপত্রে এই তিন জন নিজেদের মেয়েদের নিয়ে ভারতে পালিয়ে এসেছে বলে একটি প্রতিবেদনও বার হয়। সেই খবর নজরে আসায় সীমান্ত লাগোয়া ভারতীয় থানাগুলিকে খবর পাঠানো হয়। তারপরেই নজর রেখে শনিবার রাঙ্গাপানি এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজ্য ও বাবলু দুই ভাই। কালিপদ তাদের বাবা। মূলত দুই ভাইয়ের ঘরেই কন্যা সন্তান জন্মানোয় ক্ষুব্ধ এই পরিবার স্ত্রীদের ফেলে ভারতে এসে মেয়েদের বিক্রি করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ।।
এমনকী বাংলাদেশে তাদের জমি-বাড়িও বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশের কাছে খবর রয়েছে। ৬ বছর থেকে ১০ বছরের মধ্যে থাকা তিন শিশুকন্যাকে দার্জিলিং জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির মাধ্যমে শিলিগুড়ি চাইল্ডলাইনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।