পাতা তোলা নিয়ে গোলমালের জেরে বাগানের ম্যানেজারকে আটকে রেখে মুচলেকা লেখানোর অভিযোগ উঠল একদল চা শ্রমিকের বিরুদ্ধে।
কাঁচা পাতা তোলার পরিমাণ নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে তরাই-এর বাগডোগরা থানার হাঁসখোয়া চা বাগানে গণ্ডগোলের সূত্রপাত হয়। বাগানের ম্যানেজারকে মারধর করে টানা পাঁচ ঘণ্টা আটকে রেখে মুচলেকা লেখানোর অভিযোগ উঠেছে। বাগানে পুলিশ থাকলেও রাত পর্যন্ত বাগান কর্তৃপক্ষ পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি।
কাজ বন্ধের কোনও বিজ্ঞপ্তিও জারি হয়নি। বাগানের মালিকপক্ষ ও শ্রমিক সংগঠনগুলি ঘটনার নিন্দা করে দ্রুত আলোচনায় বসে সমস্যা মেটানোর কথা বলেছে। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি শিলিগুড়ির শ্রম দফতরে সমস্যা মেটাতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকও ডাকা হয়েছে বলে দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন।
বাগান সূত্রের খবর, আইন অনুসারে প্রত্যেক শ্রমিককে রোজ সর্বাধিক ২৬ কেজি পাতা তোলার জন্য মালিকপক্ষ বলতে পারেন। হাঁসখোয়া বাগানে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিদিন ২২ কেজি করে পাতা তুলে আসছেন শ্রমিকরা। বাগানে ছ’টি শ্রমিক সংগঠন রয়েছে। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সংগঠনগুলির নেতাদের নিয়ে কর্তৃপক্ষ বৈঠক করেন। সেখানে ঠিক হয়, মার্চ মাস থেকে ২২ কেজির পরিবর্তে শ্রমিকেরা ২৪ কেজি করে রোজ পাতা তুলবেন। বাগানস্তরে দ্বিপাক্ষিক চুক্তিও হয়। গত বুধবার থেকে হঠাৎ করে চুক্তি নিয়ে সাধারণ শ্রমিকদের একাংশ আপত্তি তোলেন। অভিযোগ, এ দিন সকালে প্রথম শিফটের কাজের পরই বাগানের প্রায় দু’শো শ্রমিক কাজ করবেন না বলে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন। বেলা ১টা নাগাদ হঠাৎ তারা ম্যানেজার দিলীপ মুখোপাধ্যায়ের বাংলোতে চড়াও হন। তাঁকে টেনে বার করে মারধর করা হয়। তারপরে জোর করে বাগানের দফতরে নিয়ে গিয়ে ঘেরাও করা হয়। পাঁচ ঘণ্টা পর একদল শ্রমিক জোর করে ম্যানেজারকে দিয়ে ২২ কেজি পাতা তোলার নিয়ম চলবে বলে মুচলেকা লেখান।
টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার তরাই শাখার সচিব সুমিত ঘোষ বলেন, ‘‘মারাত্মক ঘটনা। শ্রমিকরা আইন নিজেদের হাতে তুলে নিচ্ছে। এ রকম চললে তো বাগান কেউ চালাবেন না। পুলিশ-প্রশাসনকে বিষয়টি দেখতে হবে।’’ হাঁসখোয়া বাগানে ১৭৫০ জন শ্রমিক কাজ করেন বলে জানা গিয়েছে।