প্রতীকী ছবি।
নতুন কর্মী, নতুন নেতা। এমনই স্লোগান বিজেপিকে বেঁধে দিয়েছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ। রাজ্যে বিধানসভা ভোটে বিপর্যয়ের পরে বিজেপিকে ‘বাঁচাতে’ হলে এই স্লোগানেই চলতে হবে বলে সঙ্ঘের নির্দেশ। তাদের নির্দেশ, যত বেশি সম্ভব বুথস্তর থেকে নতুন সদস্য করতে হবে এবং বুথস্তরের কমিটিগুলিতেও নতুনদের শামিল করতে হবে। এবং এই নতুনদের বয়স হবে ১৮ থেকে ৩০ এর মধ্যে।
ঘটনাচক্রে, তৃণমূলও নবীন তথা কমবয়সি মুখকে সংগঠনে জায়গা দিতে শুরু করেছে। জলপাইগুড়িতে এমন কয়েকজনকে ব্লক বা জেলায় আনা হয়েছে যাঁদের বয়স চল্লিশের নীচে। জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রশাসক বোর্ডেও একাধিক নতুন এবং কমবয়সি মুখ আনা হয়েছে।
সঙ্ঘের নির্দেশ ঘিরে বিজেপিতে ক্ষোভ এবং বিতর্কও শুরু হয়েছে। বিজেপি নেতাদের একাংশের প্রশ্ন, সঙ্ঘ কি তবে এতদিনের নেতাদের উপর আস্থা রাখতে পারছে না?
সম্প্রতি জলপাইগুড়িতে সঙ্ঘের সমন্বয় বৈঠক হয়েছে। শহরের পান্ডাপাড়ায় সেই বৈঠকে সঙ্ঘের বিভিন্ন সংগঠন বনবস্তি কল্যাণ পরিষদ, বিদ্যার্থী পরিষদ, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বিদ্যাভারতী, একল স্কুল, মজদুর সঙ্ঘের মতো শাখা সংগঠনগুলিকে ডাকা হয়েছিল। সেই বৈঠকে ডাক পান বিজেপি নেতারাও। বৈঠকে বিধানসভা ভোটের ফল নিয়ে সব সংগঠনের কাছে জানতে চাওয়া হয়। বিজেপির প্রতিনিধিদের একগুচ্ছ নির্দেশও দেওয়া হয়।
বিজেপি নেতাদের একাংশের দাবি, বরাবরই সঙ্ঘের থেকে বিজেপিতে নির্দেশ আসে। যে নির্দেশ বিজেপির অন্দরে ‘সামাজিক সংগঠনের নির্দেশ’ বলে পরিচিত। সাধারণত বিজেপির উপরতলার মাধ্যমে সেই নির্দেশ জেলা এবং বুথস্তরে আসে। কিন্তু এমন ভাবে সভায় ডেকে সরাসরি সঙ্ঘের থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এমন বিরল বলে দাবি। বিধানসভা ভোটে হারের পরে বিজেপি নেতাদের একাংশের কড়া সমালোচনা করেছিল সঙ্ঘ। তখনই অনেকে মনে করছিলেন সঙ্ঘের হস্তক্ষেপ বাড়তে পারে। এমন বৈঠক এবং নির্দেশ আসার পরে বিজেপির দাবি, সঙ্ঘ যে দলের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি হাতে তুলে নিতে চাইছে তা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। যদিও এক বিজেপি নেতার মন্তব্য, ‘‘এতে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। ভোটের ফলাফল আরও খারাপ হতে পারে। কারণ আর যা-ই থাকুক, সঙ্ঘের প্রচারকদের কারওরই মেঠো রাজনীতি এবং ভোট পরিচালনার কোনও অভিজ্ঞতা নেই, এবং ওঁরা সে সব শিখতেও চান না।’’