—নিজস্ব চিত্র।
নদীর জলস্তর কমলেও ভাঙন অব্যাহত মালদহে। রবিবারও মানিকচকের ভুতনির কালুটনটোলায় ভাঙনে তলিয়ে গিয়েছে নদী বাঁধের একাংশ। ভাঙন প্রতিরোধ, পুনর্বাসনের দাবিতে পথে নামেন নদী পারের বাসিন্দারা। সোমবার মালদহের মিল্কিতে রাজ্য সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে, পথ অরোধ করে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। বিক্ষোভে শামিল হয় স্কুলের ছাত্রছাত্রীরাও।
ভাঙন রোধের কাজে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছেন দক্ষিণ মালদহের সাংসদ কংগ্রেসের জেলা সভাপতি আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালু)। তিনি বলেন, “বর্ষার মরসুমে জেলায় নদী ভাঙন ফি বছর দেখা যাচ্ছে। কংগ্রেস কেন্দ্রে সরকার থাকাকালীন ভাঙন রোধের প্রচুর কাজ হয়েছে। এখন কোনও কাজ হচ্ছে না। তাই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।”
কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সমালোচনা করে সরব রাজ্যের সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। তাঁর দাবি, “জেলায় ভাঙন রোধে ১০০ কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ হয়েছে। রাজ্য সরকার ভাঙন রোধের চেষ্টা করছে। তবে কেন্দ্রের সরকার কোনও বরাদ্দই করছে না।” এর পাল্টা উত্তর মালদহের সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, “কেন্দ্রের সরকার ভাঙন রোধের কাজে প্রস্তুত। তবে রাজ্য সরকার কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব দিচ্ছে না।”
এ বারও বর্ষার মরসুম শুরু হতেই মানিকচকের গোপালপুর, ভুতনি, বৈষ্ণবনগর, রতুয়ার মহানন্দাটোলার মতো গ্রামগুলিতে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনে চাষের জমির পাশাপাশি, বসতভিটেও নদীতে তলিয়ে গিয়েছে। ভাঙনের আশঙ্কায় ঘর-বাড়ি ভেঙে নিচ্ছেন নদী পারের বাসিন্দাদের একাংশ। সেচ দফতরের দাবি, এ দিন গঙ্গা, ফুলহার এবং মহানন্দা—তিন নদীরই জলস্তর বিপদসীমার নীচে রয়েছে। জল কমলে গঙ্গা, ফুলহারের ভাঙন শুরু হয়। সপ্তাহ খানেক পরে, নদীগুলিতে ভাঙনের সম্ভাবনা রয়েছে। ইংরেজবাজারের মিল্কি এলাকায় এ দিন মানিকচকের গোপালপুরের বাসিন্দারা রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের বিক্ষোভে প্রায় তিন ঘণ্টা রাজ্য সড়ক অবরোধ হয়ে থাকে। পরে, পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। আন্দোলনকারী মহম্মদ হুসেন আলি বলেন, “বালির বস্তা দিয়ে কখনও ভাঙন ঠেকানো যায় না। তার পরেও রাজ্য সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে বালির বস্তা দিয়ে ভাঙন রোধের কাজ করছে। আর ভাঙনে ঘরবাড়ি হারিয়ে আমরা উদ্বাস্তু হয়ে যাচ্ছি। তাই ভাঙন রোধের স্থায়ী কাজ ও পুনর্বাসনের দাবিতে আমরা সবাই মিলে পথে নেমেছি।” যদিও ভাঙন রোধের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন সেচ দফতরের কর্তারা।