সদ্যোজাতের চিকিৎসা না করে টালবাহানা করেছেন চিকিৎসক। এই অভিযোগে হাসপাতালের একাধিক ওয়ার্ডে ভাঙচুর চালাল এক যুবক। চিকিৎসককে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ।
শুক্রবার ভোরের এই ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। ঘটনাস্থলে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। পরে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃত শিবু সিংহ ইংরেজবাজারের কৃষ্ণপল্লির বাসিন্দা। মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে শিবু সিংহ তাঁর স্ত্রী মাম্পিকে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ দিন ভোর ৩টে নাগাদ অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পুত্র সন্তানের জন্ম দেন তিনি। সদ্যোজাত শিশুটি কাঁপতে শুরু করায় বিষয়টি কর্তব্যরত চিকিৎসক দেবদ্রুতি করণকে জানান শিবুবাবু। অভিযোগ, তিনি সদ্যোজাতকে দেখতে অস্বীকার করেন। এরপরই উত্তেজিত হয়ে শিবুবাবু হামলা চালান বলে অভিযোগ। মেডিক্যাল কলেজের অপারেশন থিয়েটরের ছ’টি দরজা, প্রসূতি বিভাগ এবং লেবার রুমের দরজার কাঁচ ভাঙচুর করা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক দেবদ্রুতিবাবুকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ।
ভোরবেলা এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অন্য রোগীর আত্মীয়-পরিজনেরা। পরে পুলিশ গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভাঙচুর, চুরি ও ছিনতাই রুখতে সিসিটিভির মাধ্যমে নজরদারি চালাচ্ছে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। সেই সিসিটিভির ফুটেজ দেখে অভিযুক্ত শিবু সিংহকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এদিনই পুলিশ তাকে পেশ করে মালদহ জেলা আদালতে। শিবুবাবুর অভিযোগ, ‘‘চিকিৎসক রোগী দেখতে অস্বীকার করেন। ভাঙচুরের ঘটনা ঠিক নয়।’’
এ দিনের ঘটনার পরিপেক্ষিতে চিকিৎসকেরা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। চিকিৎসক দেবদ্রুতিবাবু বলেন, ‘‘ওই শিশুটিকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছিল। ওই যুবককে বিষয়টি বলতে গেলেই তিনি আমার উপরে চড়াও হয়ে মারধর করেন।’’ মালদহ মেডিক্যালের সহ অধ্যক্ষ তথা হাসপাতাল সুপার অমিতকুমার দাঁ বলেন, ‘‘সিসিটিভির ফুটেজে ওই যুবকের তাণ্ডব স্পষ্ট দেখা গিয়েছে। এমন ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। পুলিশকে কড়া পদক্ষেপ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।’’