সেতুবন্ধন: পরীক্ষায় পাশ তিস্তার রেলসেতু। নিজস্ব চিত্র।
পরীক্ষায় ‘পাশ’ করল জলপাইগুড়ির দ্বিতীয় তিস্তা রেল সেতু। বৃহস্পতিবার বেশি রাতে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের তরফ থেকে তিস্তার দ্বিতীয় রেল সেতুকে চলাচলের উপযোগী বলে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে নতুন লাইনে ট্রেন চলাচলও শুরু হয়ে গিয়েছে। অসম থেকে নিউ জলপাইগুড়ির (এনজেপি) দিকে যাওয়া ট্রেনগুলি এই নতুন সেতু দিয়ে চলাচল করবে। তিস্তা রেল সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় এনজেপি থেকে গুয়াহাটি পর্যন্ত ৪৭৭ কিলোমিটার পথের প্রায় পুরোটাই ডবল লাইন হয়ে গেল। রেল সূত্রের দাবি, এই পথে এখনও ২৬ কিলোমিটার অংশে লাইন পাতা এবং বিদ্যুতের তার টানার কাজ চলছে। দ্রুত সেই কাজ শেষ হয়ে গেলে পুরো পথটাই ডবল লাইনের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ বলেন, “শুক্রবার থেকে তিস্তার দ্বিতীয় রেল সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। তার আগে সব রকম পরিদর্শন সমীক্ষা শেষ হয়েছে। বহু দিন ধরেই এই সেতু নিয়ে নানা সমস্যা এসেছিল। সেগুলি এক এক করে সমাধান করা সম্ভব হয়েছে।”
জলপাইগুড়ি শহর ছুঁয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তার উপরে দ্বিতীয় রেল সেতু তৈরির সময় থেকেই বিপত্তি শুরু। তিস্তা নদীতে সেতু তৈরির স্তম্ভ বসানোর পরে দেখা যায় একটি স্তম্ভ হেলে গিয়েছে। খোঁজখবর করে রেল জানতে পারে স্তম্ভের নীচে বড় পাথর রয়েছে। একটি স্তম্ভ বাদ দিয়ে কিছুতেই সেতু বিছানো সম্ভব নয় তিস্তার মতো বড় নদীতে। তার পরে শুরু হয় উপায় খোঁজা। দু’বছর ধরে ভাবনাচিন্তা করে, নদীর গতিপ্রকৃতি দেখে ঠিক হয়, হেলে যাওয়া স্তম্ভটির মাথা কেটে, তার চারপাশ দিয়ে ছোট ছোট স্তম্ভ তৈরি করে মূল স্তম্ভ গাঁথা হবে। সে মতোই নতুন করে স্তম্ভ তৈরি করে সেতু বিছানো হয়েছে। গত ২৫ জুন থেকে তিস্তার দ্বিতীয় রেল সেতুতে সিগন্যাল ব্যবস্থা বসানো হয়েছে। গত ৩০ জুন চূড়ান্ত পরিদর্শন হয়েছে। রেলের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়, “সেতুর পুরোটাই রেলের মানদণ্ড মেনেই তৈরি হয়েছে। তবু একটি স্তম্ভে যে হেতু সমস্যা ছিল, তাই প্রশ্ন তো ছিলই। চূড়ান্ত পরিদর্শনে সেতুটি ছাড়পত্র পেয়েছে। এটাই নিশ্চিন্ত।”
রেলের দাবি, ডবল লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ার এটিই ছিল চূড়ান্ত ধাপ। রেল সূত্রের খবর, রাজধানী-সহ সব ট্রেনেরই গতি বাড়বে। পুরো পথে ডবল লাইনে টানা ট্রেন চলাচল শুরু হয়ে গেলে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতে চলাচলকারী সব ট্রেনেরই গতিবেগ বাড়বে।