স্বাধীনতা দিবসের আগে ফের ভিডিয়ো প্রকাশ করে আলাদা রাজ্যের দাবি জানালেন কেএলও প্রধান জীবন সিংহ। বৃহস্পতিবার রাতে এই ভিডিয়ো প্রকাশ করেন তিনি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই ভিডিয়োয় বাংলার সঙ্গে অসমে থাকা কোচ-কামতাপুর এলাকার প্রসঙ্গ তুলেছেন তিনি। আনন্দবাজার এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি। কোচবিহারের পুলিশ বিষয়টিকে হাল্কা করে দেখছে না। এমনিতেই ১৫ অগস্টের আগে গোটা উত্তরবঙ্গ নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলেছে পুলিশ। পুলিশের আশঙ্কা, নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে নাশকতামূলক কাজ করতে পারে কেএলও। কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার অবশ্য বলেন, “পুরনো কিছু কথা নতুন করে বলা হয়েছে ভিডিয়োটিতে। পুরো বিষয়টির দিকেই নজর রাখা হচ্ছে।”
ভিডিয়োয় জীবন বলেন, ‘‘১৯৪৯ সালের ২৮ অগস্ট ভারত সরকারের সঙ্গে চুক্তি মোতাবেক ‘কোচ-কামতাপুর’ ভারতের অংশ হয়। সেই চুক্তি মোতাবেক ‘কোচ-কামতাপুর’ ‘গ’শ্রেণির রাজ্য। আলাদা রাজ্য পেয়ে বাঙলি, মরাঠি, বিহারি, তামিল, পঞ্জাবি আলাদা রাজ্য পেয়ে অনেক উন্নতি করেছে। সেখানে কোচ-কামতাপুরের মানুষ আলাদা রাজ্য পায়নি। সেখানে ওই এলাকা অসম, পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারে বিভক্ত করে দেওয়া হয়। তাতে ওই এলাকা আর্থিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সব দিক থেকে পিছিয়ে পড়েছে।’’
নব্বইয়ের দশকে কেএলও-র দাপটে অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল উত্তরবঙ্গে। পরে সেনা-পুলিশের অভিযানে কেএলও-র শক্তি খর্ব হয়। গা ঢাকা দেন জীবন সিংহও। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভুটান পাহাড় ছেড়ে মায়ানমারের জঙ্গলে আত্মগোপন করে জীবন। সেখানে থিতু হওয়ার পরে ফের নতুন করে সংগঠন তৈরির কাজ শুরু করেন তিনি। সম্প্রতি রাজ্যে বিধানসভা ভোটের পরে নতুন করে সক্রিয় হতে দেখা গিয়েছে জীবনকে। এই সময়টায় বিজেপির উত্তরবঙ্গের একাধিক সাংসদ-বিধায়ক আলাদা রাজ্যের দাবিতে সরব হয়েছেন। জীবনের গলাতেও একই দাবি উঠে এসেছে।
তদন্তকারী অফিসারেরা মনে করছেন, নতুন করে আলাদা রাজ্যের দাবি জোরদার করতেই বার বার বিষয়টি তুলছেন জীবন। এমন ভিডিয়ো প্রকাশ করে যুবক ও তরুণদের একটি অংশকে কাছে টেনে নতুন করে সংগঠন শক্তিশালীও করতে চাইছেন। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “কী ভাবে-কাদের মাধ্যমে এমন ভিডিয়ো সমাজ মাধ্যমে প্রকাশ করা হচ্ছে, তা নিয়েও তদন্ত চলছে।”