নজরদারি দাবি মিড-ডে মিলে

বালুরঘাটে ধারদেনা, বিনিময় প্রথার উপরেই মিড ডে মিল চলছে। কিন্তু, প্রত্যন্ত এলাকার কিছু স্কুল থেকে সমস্যার খবর পৌঁছেছে প্রশাসনের কাছে। আপাতত ততটা গুরুতর হয়নি।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৬ ০২:০১
Share:

বিনিময় প্রথাও

Advertisement

বালুরঘাটে ধারদেনা, বিনিময় প্রথার উপরেই মিড ডে মিল চলছে। কিন্তু, প্রত্যন্ত এলাকার কিছু স্কুল থেকে সমস্যার খবর পৌঁছেছে প্রশাসনের কাছে। আপাতত ততটা গুরুতর হয়নি। তবে জেলার ভারপ্রাপ্ত জেলাশাসক অমলকান্তি রায় তা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন। তিনি মিড ডে মিলের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসনিক অফিসারদের ডেকে বাড়তি নজরদারির নির্দেশ দিয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত জেলাশাসক জানান, চলতি মাসে তেমন সমস্যা হবে না বলে অনেকে জানিয়েছেন। কিন্তু, আগামী মাসে মিড ডে মিলে সঙ্কট তৈরির আশঙ্কা পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সে জন্যই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

৯ চেয়ে ২

জলপাইগুড়ির মালবাজার ব্লকের সমস্যা বেশ জটিল আকার নিয়েছে। সেখানে অগস্ট মাসের পরে মিড ডে মিলের টাকা তোলা যায়নি। অক্টোবরেও পুজোর আগে কিছু দিন মিড ডে মিল চলেছে। এই সংক্রান্ত পুরানো দুই মাসের বকেয়া টাকা স্কুলগুলোর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকে গেলেও নিয়মের গেরোয় আটকে পড়েছে টাকা তোলা। প্রাথমিক স্কুলগুলোয় যেখানে গড়ে ১৫০ জন করে পড়ুয়া রয়েছে, সেখানে মিড ডে মিলের মাসিক বিল গড়ে ৯ হাজার টাকার কাছাকাছি হয়। অথচ মাত্র দু’হাজার টাকা করেই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ দেবেন বলে জানিয়ে দিয়েছে। তাই মালবাজার ব্লকের প্রাথমিক স্কুলগুলোর প্রধান শিক্ষকেরা টাকার অভাবে কী করবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না। তা হলে চলছে কী ভাবে? কোনও এলাকার শিক্ষক যেমন স্থানীয় ব্যবসায়ী, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের অনুরোধ করে ধারে সব্জি ও রান্নার সামগ্রী দেওয়ার অনুরোধ করেছেন। আবার কোথাও ডাল, সয়াবিন বাকিতে মিললেও ডিম, সব্জি আর ধারে দিতে নারাজ দোকানিরা। মালবাজার ব্লকের ডামডিম বিএফপি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক নবীন সাহা জানালেন, তিনি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করে তাঁদের আরও কিছু দিন কষ্ট করে ধারে রান্নার কাজ চালিয়ে যেতে অনুরোধ করেছেন। নবীন বাবুর প্রশ্ন, ‘‘২ হাজার টাকা করে প্রতিদিন তোলার জন্য ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়ালে স্কুল কে করবে?’’

আর কত দিন!

কোথাও মেনুতে শুধুই সয়াবিন৷ আবার কোথাও সেটাও বন্ধের মুখে৷ নোট বাতিলের জেরে জলপাইগুড়ির অনেক স্কুলের মিড ডে মিলের অবস্থা এই মুহূর্তে এমনই৷ মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক টেস্ট পরীক্ষা যাদের চলছে, সমস্যা সেখানে নয়। আসব গোলমাল প্রাথমিক স্কুলগুলোয়। পাহাড়পুর খাগিড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নকুল রাজবংশীর কথায়, একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে স্কুলে মিড ডে মিলের দায়িত্ব দেওয়া রয়েছে৷ সপ্তাহে কোন দিন কী মেনু হবে, তা-ও ঠিক করা রয়েছে৷ কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে ছাত্রছাত্রীদের শুধুই সোয়াবিন দেওয়া হচ্ছে৷ কিছু বললেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর লোকেরা বলছেন, নোট সমস্যার জন্য এখন সয়াবিন ছাড়া অন্য কোনও সব্জি রান্না করা সম্ভব নয় ৷ বাহাদুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসুয়াপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুব্রত ভট্টাচার্যের কথায়, নোট সমস্যার জেরে স্কুলে ক’দিন যে মিড ডে মিল চালানো যাবে, সেটাই বুঝতে পারছি না! সুব্রতবাবু জানান, কোনও দোকানই বাকিতে আর মাল দিতে চাইছে না৷ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর লোকেরা তাই সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এ ভাবে আর বেশি দিন তাঁরা টানতে পারবেন না৷

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement