মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
কাল, মঙ্গলবার দুপুরে শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের মাঠে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারি সভা হওয়ার কথা। সে দিনই শিলিগুড়ি আসার কথা রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। আজ, সোমবার থেকেই শহরে ধর্না বিক্ষোভে বসার কথা বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের। এই অবস্থায় শহরের পরিস্থিতি ঠিক রাখতে রবিবার দফায় দফায় বৈঠক করে গেলেন পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা।
পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার বিকেলে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে জেলাশাসকের নেতৃত্বে পুলিশ প্রশাসনের অফিসারদের বৈঠক হয়। রাত ৮টার পের কমিশনারেটে শহরের আইসি, ওসি-সহ উচ্চ পুলিশ আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন পুলিশ কমিশনার সি সুধাকর। তার পরে রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ শহরের পূর্ত দফতরের বাংলোয় মেয়র গৌতম দেবের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পুলিশ কমিশনার। বিশেষ করে, মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে শহরের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে ঠিক থাকে, তা নিয়েই উদ্বিগ্ন পুলিশকর্তারা। শহরের পুলিশি বন্দোবস্ত, মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান এবং বিজেপির কর্মসূচি নিয়ে পুলিশ কমিশনার ও মেয়রের কথা হয়েছে। সোমবার থেকে মঙ্গলবার, তাই বিরোধী কোনও দলের তরফে সমস্যা বা গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করা হলে, পুলিশ গ্রেফতারি বা কড়া ব্যবস্থার দিকেই যাবে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তার কথায়, ‘‘শহরে সোমবার ও মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী থাকছেন। পুলিশি বন্দোবস্ত শেষ। তবে কোনও দলের কর্মসূচি ঘিরে যাতে গোলমাল না হয়, তা দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে, আইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
কমিশনারেট সূত্রের খবর, সোমবারই বিকেলে হেলিকপ্টারে ডুয়ার্সের বানারহাট থেকে সভা সেরে মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়ি চলে আসতে পারেন। ‘উত্তরকন্যা’ সংলগ্ন এলাকায় হেলিকপ্টার নামবে। তার পরে রাতে মুখ্যমন্ত্রী ‘উত্তরকন্যা’র অতিথি নিবাস ‘কন্যাশ্রী’-তে থাকতে পারেন। মঙ্গলবার অতিথি নিবাস থেকে ১টার পরে সোজা স্টেডিয়ামে যেতে পারেন। সভার পরে স্টেডিয়াম থেকে দুপুর আড়াইটে থেকে ৩টের মধ্যে তাঁর বাগডোগরা বিমানবন্দরে যাওয়ার কথা। স্টেডিয়ামে বিভিন্ন সরকারি সুবিধাপ্রাপক, অতিথিদের নিয়ে ৯ হাজারের মতো লোক আসতে চলছে। একাধিক গেট দিয়ে কার্ডের নির্দেশ মেনে সবাইকে মাঠে ঢোকানো হবে। স্টেডিয়ামের সামনের বিধান রোডের বড় অংশে যান চলাচল বন্ধ করা হচ্ছে। তেমনই স্টেডিয়ামের চারদিকে অতিরিক্ত পুলিশ কর্মীরা থাকছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর যাত্রাপথে হাসমিচকেই বিজেপি বিধায়কের আন্দোলনে বসার কথা রয়েছে। এ দিন থেকে সেই এলাকায় পুলিশের তরফে নজরদারি শুরু করা হয়েছে। তেমনিই, গোটা স্টেডিয়ামের চারপাশে অতিরিক্ত সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। হিলকার্ট রোডে বিজেপি দফতরে নজরদারির জন্য আলাদা অফিসারেরা থাকছেন। কমিশনারেটের অফিসারেরা জানাচ্ছেন, হাসমিচক বা স্টে়ডিয়াম চত্বরে কোথাও কোনও কর্মসূচির অনুমতি নেই। সোমবার তো বটেই, মঙ্গলবারও ওই সময়ে কোনও মিছিল-মিটিং চলবে না।