পদ দিয়ে বিবাদ সামাল তৃণমূলের

সব কাউন্সিলরকে সব ক’টি ওয়ার্ডে সমান ভাবে উন্নয়নের কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন দলীয় নেতৃত্ব। শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘‘কংগ্রেস যে ভাবে পুরসভা চালিয়েছে, আমরা সে ভাবে চালাব না। সব ওয়ার্ডে উন্নয়নই লক্ষ্য।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা ও রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৭ ০২:১৮
Share:

দলের বিবাদমান দুই গোষ্ঠীর দুই কাউন্সিলরকে রায়গঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিয়ে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামাল দিলেন তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব।

Advertisement

চেয়ারম্যান নির্বাচন নিয়ে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এড়াতে শনিবার বিকালে কলকাতায় দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি ও দলের উত্তর দিনাজপুর জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী পুরসভার ২৪ জন তৃণমূল কাউন্সিলরের সঙ্গে বৈঠক করেন। ভবানীপুরে সুব্রতবাবুর কার্যালয়ে ওই বৈঠক হয়। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অমল আচার্য, রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী গোলাম রব্বানি হাজির ছিলেন।

উত্তর দিনাজপুরের দলীয় পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতিতে এ দিন ওই কাউন্সিলরদের স্পষ্ট বলে দেওয়া হয় যে সন্দীপ বিশ্বাসকে চেয়ারম্যান এবং অরিন্দম সরকারকে ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে মেনে নিতে হবে সবাইকে। সব কাউন্সিলরকে সব ক’টি ওয়ার্ডে সমান ভাবে উন্নয়নের কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন দলীয় নেতৃত্ব। শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘‘কংগ্রেস যে ভাবে পুরসভা চালিয়েছে, আমরা সে ভাবে চালাব না। সব ওয়ার্ডে উন্নয়নই লক্ষ্য।’’

Advertisement

তবে গত সপ্তাহে কেন দলীয় কাউন্সিলরদের মধ্যে মতভেদ হয়েছিল? শুভেন্দুর বক্তব্য, ‘‘কোনও গোলমাল ছিল না। সবাই এক মত হতে পারেনি। তাই সবাইকে ডেকে আমাদের হস্তক্ষেপ করতে হল।’’ আগামী মঙ্গলবার কি ভোটাভুটি হবে? শুভেন্দুবাবুর জবাব, ‘‘কংগ্রেস এবং বিজেপির উপর নির্ভর করছে।’’

এ দিনের বৈঠকে সুব্রতবাবু ও শুভেন্দুবাবু দলের রাজ্য নেতৃত্বের পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সন্দীপ বিশ্বাসকে চেয়ারম্যান হিসেবে মেনে নেওয়ার জন্য দলীয় কাউন্সিলরদের নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে, তাঁরা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর তথা আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি অরিন্দম সরকারের নামও ঘোষণা করে দেন। আগামী ১৩ জুন পুরসভার প্রথম বোর্ড মিটিংয়ে সরকারিভাবে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচন হওয়ার কথা।

নির্বাচনে ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৪টি ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থীরা জয়ী হন। কংগ্রেস দু’টি ও বিজেপি একটি আসন দখল করে। ৫ জুন চেয়ারম্যান নির্বাচনের বৈঠক ছিল। বৈঠকে তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম অধিকারী একটি খাম খুলে চিঠি বার করে চেয়ারম্যান হিসেবে সন্দীপবাবুর নাম প্রস্তাব করেন। ওই চিঠিতে শুভেন্দুবাবুর সই ছিল। পুরসভা নির্বাচনের মুখে জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্তের ডানহাত বলে পরিচিত সন্দীপবাবু তৃণমূলে যোগ দিয়ে অমলবাবুর অনুগামী বলে পরিচিত হয়ে যান। ওই বৈঠকে সদ্য তৃণমূলে যোগদানকারী সন্দীপবাবুকে চেয়ারম্যান হিসেবে মেনে নিতে পারেননি অরিন্দমবাবুর অনুগামী বেশিরভাগ কাউন্সিলর। তাঁরা চেয়ারম্যান হিসেবে পাল্টা অরিন্দমবাবুর নাম ঘোষণা করেন। এরপরেই দু’পক্ষের মধ্যে প্রবল হইহট্টগোল বেধে যায়। সন্দীপবাবু ও অরিন্দমবাবু দু’জনেই চেয়ারম্যান পদে বসার দাবিতে অনড় থাকায় শুরু হয় ভোটাভুটি। ১২টি ভোট পড়ার পর তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রতবাবুর নির্দেশে চেয়ারম্যান নির্বাচন স্থগিত করে দেন তৃণমূল কাউন্সিলররা।

সন্দীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘যা বলার অমলবাবু বলেছেন।’’ অরিন্দমবাবুর দাবি, ‘‘দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement