ইদের ঠিক আগেই ফলের বাজারে আগুন

শহরের প্রাণকেন্দ্র হিলকার্ট রোডে এক মাসের বাজার। রোজার প্রথম দিন থেকে ইদের দিন অবধি চলা এই বাজারের লোক মুখে নাম—মজসিদ বাজার। সেমাই থেকে শুকনো ফল, নমাজের সাদা টুপি থেকে আতর। সোমবারের সন্ধ্যায় বাঁশের ছোট্ট ছোট্ট চাঁদোয়া টাঙানো দোকানগুলিতে তিল ধারনের জায়গা নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৬ ০৩:২৩
Share:

কেনাকাটা তুঙ্গে। — নিজস্ব চিত্র

শহরের প্রাণকেন্দ্র হিলকার্ট রোডে এক মাসের বাজার। রোজার প্রথম দিন থেকে ইদের দিন অবধি চলা এই বাজারের লোক মুখে নাম—মজসিদ বাজার। সেমাই থেকে শুকনো ফল, নমাজের সাদা টুপি থেকে আতর। সোমবারের সন্ধ্যায় বাঁশের ছোট্ট ছোট্ট চাঁদোয়া টাঙানো দোকানগুলিতে তিল ধারনের জায়গা নেই। চোখে মুখে উচ্ছ্বাস শেখ আশরফি, মহম্মদ জাহাঙ্গিরের মতো দোকানিদের। হাসমিচক লাগোয়া ওই বাজারের ভিড়, যানজট সামলাতে রীতিমত ঘাম ঝরাতে হচ্ছে সিভিক ভলান্টিয়ারদের। সকাল থেকে দুপুর অবধি মুখে অবশ্য এতটা চওড়া হাসি ছিল না আশরফিদের। ভোর থেকে টানা বৃষ্টিতে জমেনি বাজার। বিকালে বৃষ্টি কমতেই তাই ভিড় উপছে পড়ে।

Advertisement

অন্য জেলার বিভিন্ন শহরেও একই দৃশ্য চোখে পড়েছে। সন্ধ্যা হতেই বাজারগুলিতে মানুষের ঢল নেমেছে। ফল থেকে সেমাই, সবই বিক্রি হচ্ছে। বিক্রি হচ্ছে জামা-কাপড়, টুপিও। অনেকেই পরিবার নিয়ে বাজার করেছেন। রাত পোহালেই ইদ, তাই এ দিন বাজারগুলিতে ভিড় বাড়ে দুপুর থেকেই। দোকানিরা জানান, রোজা শেষ করেই শেষ বাজারে কেনাকেটাতে ব্যস্ত বাসিন্দারা।

শিলিগুড়িতে বাজার করতে এসেছেন আশপাশের অন্য এলাকার মানুষও। তবে বাজারে দাম বেশ চড়া। দাম নিয়ে চলছে দরাদরিও। মিলনপল্লির বাসিন্দা আলেমা বেগম জিনিসপত্রের দাম নিয়ে রীতিমত দোকানদের সঙ্গে তর্ক জুড়ে বসেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘উৎসব পেলেই এদের দামের ঠিক থাকে না। দ্বিগুণ দাম চেয়ে বসছে।’’ বিধানমার্কেট থেকে মহাবীরস্থান বাজার বা উড়ালপুলের নীচের ফল-সব্জির বাজারে ইদের কেনাকেটার ভিড় সন্ধ্যার পর প্রতিদিনই চোখে পড়ে। আপেল থেকে কলা বা শসা, ছোলা থেকে কাজুবাদাম, খেজুর সব কিছুরই যেন রাতারাতি দাম বেড়ে গিয়েছে বলে জানাচ্ছেন বাসিন্দারা। কৃষি দফতরের সহ কৃষি অধিকর্তা মেহফুজ আহমেদ হুগলির বাসিন্দা হলেও থাকেন শিলিগুড়িতে। তিনি বলেন, ‘‘ফল, সব্জির এমন সব দাম চাইছে, ভাবাই যায় না।’’

Advertisement

ইফতারে কাঁচা ফল, শুকনো ফল, তেলে ভাজা থেকে সেমাই, ছোলার নানা খাবারও তৈরি হয়। দোকানিদের কথায়, ‘‘এ বার একই দিনে ইদ আর রথযাত্রা। তাই জিনিসপত্রের দাম তো বাড়বেই, এটাই স্বাভাবিক। তা ছাড়া বৃষ্টিতে তো বাজার অনেকদিনই মার খেয়েছে। মালপত্র প্লাস্টির ঢাকা দিয়ে বসে থাকতে হয়েছে। বৃষ্টি কমলে লাভের মুখ না দেখলে তো দোকান করাই দায়।’’

তৃণমূলের রাজ্য সংখ্যালঘু সেলের কার্যকরী সভাপতি নাসির আহমেদ বলেন, ‘‘বৃষ্টির জন্য দামের হেরফের হয়। রথ ও ইদ এক সঙ্গে হচ্ছে, মানুষ আনন্দে মাতবেন।’’

বাজার দর আপেল-১৮০/২০০ টাকা কেজি, কলা-৫০/৬০ টাকা ডজন, বেদানা-১৩০/১৪০ টাকা কেজি, শসা-৪০ টাকা কেজি, মুসম্বি-৭০ টাকা কেজি, সেমাই-৬০-২০০ টাকা কেজি, খেজুর-৪০ টাকা (২০০গ্রাম), শুকনো ফলের প্যাকেট-৫০টাকা, নারকেল- ৪০/৫০ একটি, ডাব-৩০/৫০ একটি, ছোলা-৮০ টাকা কেজি, আনারস-৫০/৭৫ একটি, কাজু-৬০০/৭০০ কেজি। আর সাদা টুপি-১০/২০ টাকা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement