গাড়ির চাকা মিনিট দু’য়েক গড়াতে না গড়াতেই ব্রেক কষতে হচ্ছে চালককে। অনেক সময় গাড়ি এগিয়ে নিয়ে যেতে রাস্তায় নামতে হয়েছে নিরাপত্তা রক্ষীদের। ২০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে সময় লেগেছে প্রায় দু’ঘন্টা। রবিবার সকালে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে ফরাক্কা থেকে মালদহে পৌঁছতে এমনই যানজটের কবলে পড়তে হয় নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষকদের।
কালিয়াচকে পা রেখেই যানজট নিয়ে জেলা শাসকের কাছে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন নির্বাচন কমিশনের সচিব জে কে রাও। তিনি বলেন, এমন যানজট থাকলে নির্বাচনের কাযকর্ম ব্যাহত হবে। বুথগুলিতে সময় মতো পৌঁছতে পারবে না কেন্দ্রীয় বাহিনী জওয়ানরা থেকে শুরু করে ভোট কর্মীরা। তাই বিশেষ পর্যবেক্ষক দলের প্রধান সদস্য তথা নির্বাচন কমিশনের সচিব জে কে রাও দ্রুত জাতীয় সড়কের যানজট মুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী ও পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রাজাকে। জেলা শাসক বলেন, একমুখী রাস্তার উপরে একটি গাড়ির যন্ত্রাংশ খারাপ হয়ে যাওয়ার জন্য এ দিন যানজট হয়। যানজট সমস্যা মেটানোর জন্য চেষ্টা চালাচ্ছি।
মালদহের কালিয়াচকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে যানজট নিত্যদিনের। এদিনও সেই চেনা ছবির বদল হয়নি। এদিন সকাল থেকেই জাতীয় সড়কে যানজট ছিল। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ফরাক্কার মহানন্দা ভবনে ছিলেন নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক দলের চার সদস্যের প্রতিনিধি দল। এদিন সকাল আটটা নাগাদ ফরাক্কা থেকে রওনা দেন তাঁরা। নির্বাচন কমিশনের সচিব জে কে রাও ছাড়াও ছিলেন পর্যবেক্ষক দলের সদস্য সুনীল গুপ্তা, টি সি কম ও সুরেন্দর সিংহ। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ কালিয়াচকে আসার কথা ছিলেন তাঁদের। তবে এ দিন তাঁরা কালিয়াচকে এসে পৌঁছন সকাল ৯টা ৫০ মিনিট নাগাদ। ফরাক্কা থেকে কালিয়াচকের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। সেই পথ আসতে সাধারণত সময় লাগে ৪০ মিনিট। এ দিন যানজটের জন্য পর্যবেক্ষকদের সময় লাগে প্রায় দু’ঘন্টা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কমপক্ষে ছয়বার দাড়িয়ে পড়েছে পর্যবেক্ষকদের কনভয়। প্রতিবার মিনিট পাঁচেক করে আটকে থাকতেও হয়েছে তাঁদের। আবার অধিকাংশ সময়ই গাড়ির গতি কমিয়ে আসতে হয়েছে। এদিন তাঁরা ফরাক্কা ব্রিজ পেরিয়ে এনটিপিসি মোড়, বৈষ্ণবনগর, ১৬ মাইল, সুলতানগঞ্জ এলাকায় যানজটের কারণে আটকে পড়েন। এ ছাড়া কালিয়াচক থেকে মালদহ আসার পথেও যানজটের কবলে পড়তে হয়।
কালিয়াচকের পর থেকেই মালদহ পর্যন্ত যানজট ছিল এদিন চোখে পড়ার মতো। অন্য দিনের মতো এদিনও যানজট ছিল চৌরঙ্গী মোড়, জালালপুর, সুজাপুরে। কেন এই এলাকা গুলিতে যানজট? প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চলছে। তার জন্য জাতীয় সড়কের দুই ধারে মাটি খনন করে রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে পড়েছে রয়েছে নানা নির্মাণ সামগ্রী। এছাড়া ওই এলাকা গুলি অত্যন্ত জনবহুল। সেই কারণে বিভিন্ন যাত্রীবাহী গাড়ি যাত্রী ওঠানামা করে। তার সঙ্গে রয়েছে ঢিলে ঢালা ট্রাফিক ব্যবস্থা। তারপরে একমুখী রাস্তায় গাড়ি অকেজো হয়ে গেলে সেই সময় আরও কয়েক গুণ বেড়ে যায়। পর্যবেক্ষকরা মালদহের পুলিশ প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ে বৈঠকের সময় যানজট প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। জেলার পুলিশ সুপার বলেন, জাতীয় সড়কে পর্যাপ্ত ট্রাফিক পুলিশ মোতায়ন করা হবে। সিভিক ভলান্টিয়ারদেরও রাখা হবে।